গোপালদেব-নামাঙ্কিত প্রস্তর-লিপি।
(২)
[শক্রসেন-প্রস্তরলিপি]।
প্রশস্তি-পরিচয়।
১৮৭৯ খৃষ্টাব্দে কনিংহাম [বুদ্ধগয়াধামে] এই প্রস্তরলিপিটি ভূগর্ভ হইতে উদ্ধৃত করিয়াছিলেন। ইহার একটি প্রতিকৃতিমাত্রই তাঁহার “মহাবোধি”-গ্রন্থে মুদ্রিত হইয়াছিল।[১] লিপিটি এক্ষণেআবিষ্কার-কাহিনী। “শক্রসেন-প্রস্তরলিপি” নামে কথিত হইতে পারে। ইহা যে শ্রীমূর্ত্তির পাদপীঠে উৎকীর্ণ রহিয়াছে, সেই শ্রীমূর্ত্তিটি কলিকাতার যাদুঘরে রক্ষিত হইতেছে।
এই লিপি সংস্কৃত-ভাষা-নিবদ্ধ; তিনটিমাত্র শ্লোকে সমাপ্ত। কনিংহাম ইহার পাঠোদ্ধারে কৃতকার্য্য হইতে না পারিয়া, ইহাকে গোপালদেবের শাসন-সময়ের প্রস্তরলিপি বলিয়াই পরিচয়পাঠোদ্ধার-কাহিনী। প্রদান করিয়া গিয়াছিলেন।[২] পাদপীঠে এই লিপি ব্যতীত, “যে ধর্ম্মা হেতুপ্রভবা” ইত্যাদি বৌদ্ধ-মন্ত্রটিও মধ্যস্থলে উৎকীর্ণ রহিয়াছে। শ্রীযুক্ত নীলমণি চক্রবর্ত্তী, এম্ এ, এই লিপির একটি পাঠ ও প্রতিকৃতি মুদ্রিত করিয়াছেন।[৩]
চক্রবর্ত্তী মহাশয় ইহার ব্যাখ্যা-কার্য্যে প্রবৃত্ত হইয়া, ইহাকে “শক্রসেন” নামক ব্যক্তির লিপি বলিয়া প্রকাশিত করিয়া গিয়াছেন। ইহার শ্লোক তিনটি শব্দাড়ম্বরে গৌড়ীয় রচনা-রীতিরব্যাখ্যা-কাহিনী। মর্য্যাদা রক্ষা করিয়াছে। কিন্তু দুই এক স্থলে অর্থবোধের কিঞ্চিৎ অসুবিধা আছে বলিয়াই বোধ হয়।
এই লিপিটি ৪ পংক্তিতে বিভক্ত। সকলের শেষ পংক্তিতে কেবল “শ্রীগোপালদেব-রাজ্যে” এই কথাটি উৎকীর্ণ রহিয়াছে; সংবতের উল্লেখ নাই। ইহাকেও অনেকদিন পর্য্যন্ত প্রথম গোপালদেবেরলিপি-পরিচয়। শাসন-সময়ের প্রস্তরলিপি বলিয়াই সুধীগণ গ্রহণ করিয়াছিলেন। কিন্তু তৎকাল-প্রচলিত অক্ষরাবলীর সহিত ইহার সামঞ্জস্য নাই; বরং গরুড়স্তম্ভ-লিপির অক্ষরাবলীর সহিত সাদৃশ্য দেখিতে পাওয়া যায়। তজ্জন্য, চক্রবর্ত্তী মহাশয়, ইহাকে দ্বিতীয় গোপালদেবের শাসন-সময়ের প্রস্তর-লিপি বলিয়া সিদ্ধান্ত করায়, তাহাই সুধী-সমাজে সমাদর লাভ করিয়াছে।
৮৮