বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:গৌড়লেখমালা (প্রথম স্তবক).djvu/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রথম মহীপালদেবের তাম্রশাসন।

[বাণগড়-লিপি]
প্রশস্তি-পরিচয়।

 দিনাজপুরের অন্তর্গত সুবিখ্যাত বাণগড়ের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে, পালবংশীয় [দ্বিতীয় বিগ্রহপালদেবের পুত্র] প্রথম মহীপালদেবের নামাঙ্কিত একখানি তাম্রশাসন আবিষ্কৃত হয়। তাহাআবিষ্কার-কাহিনী। অনেক দিন পর্য্যন্ত নবাব-বাজারের জমীদার নৃসিংহচরণ নন্দী মহাশয়ের নিকট দেখিতে পাওয়া যাইত। পরলোকগত নন্দকৃষ্ণ বসু, এম-এ, মহোদয় দিনাজপুরের কলেক্টর হইয়া আসিলে, তাম্রশাসনখানি তাঁহার হস্তগত হয়। তিনি তাহা কলিকাতায় প্রেরণ করিয়াছিলেন।

 এই শাসন-লিপি যখন নন্দী মহাশয়ের নিকটে দেখিতে পাওয়া যাইত, সেই সময়ে [১৮৮৬ খৃষ্টাব্দে] দিনাজপুরের স্কুল-সমূহের ডেপুটী-ইন্‌স্‌পেক্টর শ্রীযুক্ত গিরিধারী বসু মহাশয় ইহার একটিপাঠোদ্ধার-কাহিনী। ছাপ তুলিয়া লইয়া, এসিয়াটিক্ সোসাইটিতে প্রেরণ করিয়াছিলেন। তৎকালে [দৃষ্টিশক্তির দুর্ব্বলতার জন্য] ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল তাহার পাঠোদ্ধারে ব্যাপৃত হইতে অসমর্থ বলিয়া, ডাক্তার হরণ্‌লি কর্ত্তৃক ছাপগুলি অধ্যাপক কিল্‌হর্ণের নিকট প্রেরিত হইয়াছিল। তিনি সোসাইটির পত্রিকায়[] মূলানুগত পাঠ মুদ্রিত করিবার ছয় বৎসর পরে, [তাম্রশাসনখানি কলিকাতায় প্রেরিত হইলে], প্রাচ্যবিদ্যামহার্ণব শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু মহাশয় সাহিত্য-পরিষৎপত্রিকায়[] তাহার পাঠ মুদ্রিত করিয়াছিলেন।

 এই তাম্রশাসনের প্রথম পাঁচটি শ্লোক নারায়ণপালদেবের [ভাগলপুরে আবিষ্কৃত] তাম্রশাসনের অনুরূপ। ষষ্ঠ শ্লোকটি ঈষৎ রূপান্তরিত। সপ্তম হইতে দ্বাদশ শ্লোক নূতন বলিয়া,ব্যাখ্যা-কাহিনী। অধ্যাপক কিল্‌হর্ণ তাহারই ব্যাখ্যা লিপিবদ্ধ করিয়াছিলেন। বসু মহাশয়ও আদ্যন্তের অনুবাদ প্রকাশিত করেন নাই। ইহাতে প্রথম মহীপালদেবের রাজ্যলাভের কথা যে ভাবে উল্লিখিত রহিয়াছে, তাহাতে তাহার অভ্যন্তরে নানা ঐতিহাসিক তথ্য প্রচ্ছন্ন রহিয়াছে বলিয়াই বোধ হয়। তাহা একটি ঐতিহাসিক সমস্যা।

 এই তাম্রশাসনখানি ১ ফুট দীর্ঘ, ১ ফুট আড়াই ইঞ্চ প্রস্থ;—শিরোভাগে “ধর্ম্মচক্র” রাজ-মুদ্রা

  1. J. A. S. B. Vol. LXI. pp. 77-87.
  2. ১৩০৫ সালের তৃতীয় সংখ্যার ১৬৭-১৭২ পৃষ্ঠা।

৯১