(১৩)
পৃথিবী যতদূর তাঁহার অকৃত্রিম স্নিগ্ধতার আশ্রয় লাভ করিয়াছিল, ততদূর পর্য্যন্ত পৃথিবী-নিবাসী লোকসমাজ নৃত্যারম্ভচেষ্টায় ঊর্দ্ধোত্থিত বাহুযুগলে তাঁহার কীর্ত্তি কীর্ত্তন করিতেছে দেখিয়া, আনন্দ-পুলকিত-কলেবরে দেবগণ অম্বরপথে বিমান অবনমিত (বিলম্বিত) করিয়া, শ্লাঘা-ঘূর্ণিত-মস্তকে নিপতিত (?) হইয়া, সেই কীর্ত্তি-কীর্ত্তন শ্রবণ করিতেন।
(১৪)
তাঁহার পরিতোষের বা অসূয়ার লেশমাত্র উপস্থিত হইলে, তাঁহার সুধীর কটাক্ষপাতমাত্রে তদীয় অনুকূল জনগণ ধনলাভ করিতেন, প্রতিকূল জনগণ নিধন প্রাপ্ত হইতেন।
(১৫)
নিনাদশীল দন্তিবরগামী যে তারশব্দ[১] তাহা অতিমন্দমন্দভাবে অতিগভীর গিরি-গূহাতে দুরুন্নয় হইয়া বাস করিয়া থাকে।
(১৬)
দুর্ব্বিজ্ঞেয়[২] নীতির সর্ব্বত্র সন্নিবেশ-প্রভাবে, তাঁহার বিষমদশা-প্রাপ্ত ব্যাকুল অরাতিকুল দুর্গম হইতেও সুদুর্গম স্থান প্রাপ্ত হইয়া থাকে।
(১৭)
সপ্তসমুদ্ররূপ (শ্লথ) চলনশীল-শিথিল-মেখলা-বিশিষ্ট এই বসুন্ধরার কত না ভূমিপতি জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন; [কিন্তু] দীর্ঘকালেও কাহারও যে [মন্দির][৩] সমাধা লাভ করে নাই, তিনি [বিশ্বাদিত্য] এখানে জনার্দ্দনের সেই মন্দির নির্ম্মিত করাইয়াছেন।[৪]
(১৮)
এই মন্দির কৈলাস-শিখরের সম্ভ্রমকে পরাভূত করিয়া, হিমানী-দ্যুতিসম্পন্ন কুন্দ-সুন্দর যশোরাশির সমুন্নত পুঞ্জরূপে প্রতিভাত হইতেছে। তাহার অত্যুচ্চ শিখরাগ্র-নিবদ্ধ শরচ্চন্দ্রের শুভ্র শোভাবিশিষ্ট পতাকারাশিতে, নভঃস্থল যেন নূতন মঞ্জরী মুঞ্চন করিতে করিতে শোভা প্রাপ্ত হইতেছে।
১১৯