বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:গৌড়লেখমালা (প্রথম স্তবক).djvu/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

লেখমালা।

কিল্‌হর্ণ প্রকৃত পাঠটি মুদ্রিত করিয়া দিয়াছিলেন। তাহার দ্বাদশ বৎসর পরেও [১৯১০ খৃষ্টাব্দে], এশিয়াটিক্ সোসাইটী কর্ত্তৃক প্রকাশিত “রামচরিত” নামক প্রাচীন কাব্যের ভূমিকায়, মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিতবর শ্রীযুক্ত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এম, এ, [এই বিশেষণ-পদ হইতে “সুজন” শব্দটি ত্যাগ করিয়া,] “स्तूपमानावदातः” পাঠ কল্পনা করিয়া লিখিয়ছেন,—“ধর্ম্মপাল স্তূপের ন্যায় বৃহৎ এবং শুভ্রবর্ণ ছিলেন”।[] মূল তাম্রশাসনে এরূপ পাঠ নাই; রাজকবির পক্ষে এরূপ বর্ণনা লিপিবদ্ধ করিবারও সম্ভাবনা ছিল না।

 বটব্যাল মহাশয় ইহার ব্যাখ্যা-কার্য্যে প্রবৃত্ত হইয়া, [কোনরূপ প্রতিবাদে কর্ণপাত না করিয়া] ইহাকে ধর্ম্মপাল-কর্ত্তৃক ভট্টনারায়ণ নামক স্বনামখ্যাত ব্রাহ্মণ-কবিকে ভূমিদান করিবারব্যাখ্যা-কাহিনী। তাম্রশাসন বলিয়া ব্যাখ্যা করিয়াছিলেন, এবং স্বমত-সমর্থনের জন্য নানা বিচার-বিতণ্ডারও অবতারণা করিয়াছিলেন। সে ব্যাখ্যা যে প্রকৃত ব্যাখ্যা নহে, তাহা এক্ষণে সুধীসমাজে সুপরিচিত হইয়াছে।[] কিন্তু এই তাম্রশাসনের মর্ম্ম এ পর্য্যন্ত বঙ্গভাষায় অনূদিত হয় নাই। ইহাতে বাঙ্গালার ইতিহাসের যে সকল তথ্য প্রচ্ছন্ন হইয়া রহিয়াছে, তাহাও বঙ্গসাহিত্যে সুপরিচিত হইতে পারে নাই।

 এই তাম্রপট্টখানির আয়তন ১ ফুট  / ইঞ্চ দীর্ঘ এবং ১১ / ইঞ্চ প্রস্থ। ইহার শীর্ষদেশে—মধ্যস্থলে—একটি রাজমুদ্রা সংযুক্ত আছে, এবং তন্মধ্যে “श्रीमान् धर्म्मपालदेवः” এই কয়েকটিলিপি-পরিচয়। অক্ষর উৎকীর্ণ রহিয়াছে। প্রকৃত প্রস্তাবে ইহা একটি বৌদ্ধমত-বিজ্ঞাপক ধর্ম্মচক্র-মুদ্রা,—মধ্যস্থলে ধর্ম্মচক্রচিহ্ন, উভয় পার্শ্বে মৃগ-মূর্ত্তি। এই তাম্রপট্টের এক পৃষ্ঠে ৩৩ পংক্তি এবং অপর পৃষ্ঠে ২৯ পংক্তি [সংস্কৃত ভাষায় রচিত পদ্যগদ্যাত্মক লিপি] উংকীর্ণ রহিয়াছে। তিন চারিটি অক্ষর ভিন্ন সমগ্র লিপিটি অক্ষুণ্ণ অবস্থায় প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছে।

 এই তাম্রশাসন উৎকীর্ণ করাইয়া, “পরমেশ্বর পরমভট্টারক মহারাজাধিরাজ শ্রীধর্ম্মপাল দেব” [৩০ পংক্তি] তদীয় বিজয়-রাজ্যের “সম্বৎ ৩২ মার্গ দিন ১২” [৬১ পংক্তি] তারিখে “পাটলিপুত্র-সমাবাসিতলিপি-বিবরণ। [২৮—২৯ পংক্তি] জয়স্কন্ধাবার হইতে “শ্রীপুণ্ড্রবর্দ্ধন-ভুক্ত্যন্তঃ-পাতি-ব্যাঘ্রতটীমণ্ডলসম্বদ্ধ-মহন্তাপ্রকাশ-বিষয়ে” [৩০—৩১ পংক্তি] এবং “স্থালীক্কটবিষয়সম্বদ্ধাম্রষণ্ডিকা-মণ্ডলান্তঃ-পাতি” [৪১-৪২ পংক্তি] স্থানে “মহাসামন্তাধিপতি শ্রীনারায়ণবর্ম্মার” [৪৯ পংক্তি] প্রার্থনাক্রমে, নারায়ণবর্ম্মা-কর্ত্তৃক “শুভস্থলীতে” নির্ম্মিত দেবকুলে প্রতিষ্ঠিত “ভগবন্নন্ন-নারায়ণের” ও “তৎপ্রতিপালক লাট-দ্বিজাদির” [৪৯-৫১ পংক্তি]

  1. In the Khàlimpur inscription, Dharamapāla is described as স্তূপমানাবদাতঃ i.e., he was fair and as high as a stupa.—Pandita Sástri in the Introduction (p. 6) to the Rāmacarita in the Memoirs of the Asiatic Society of Bengal, Vol III, No. I.
  2. I must just mention here that surely Mr. Batavyāl has been rather rash in stating that the grant recorded in this inscription was made in favour of the poet Bhatta Náráyána—Prof. Kielhorn in Epigraphia Indica, Vol. IV, p. 243 Note.

১০