লেখমালা।
উত্তর সীমা পর্য্যন্ত গিয়াছে। নলচর্ম্মটের দক্ষিণে নামুণ্ডি-কায়িকা হইতে খণ্ডমুণ্ডমুখ পর্য্যন্ত, খণ্ডমুণ্ডমুখ হইতে বেদস-বিল্বিকা, তাহার পরে রোহিতবাটী-পিণ্ডারবিটি-জোটিকা-সীমা, উক্তারযোটের দক্ষিণ এবং গ্রামবিল্বের দক্ষিণ পর্য্যন্ত দেবিকা সীমাবিটি ধর্ম্মাযোজোটিকা। এই প্রকার মাঢ়াশাল্মলী নামক গ্রাম। তাহার উত্তরেও গঙ্গিনিকার সীমা; তাহার পূর্ব্বে অর্দ্ধস্রোতিকার সহিত [মিলিত হইয়া] আম্রযানকোলার্দ্ধযানিকা পর্য্যন্ত গিয়াছে। তাহার দক্ষিণে কালিকাশ্বভ্র, তথা হইতেও নিঃসৃত হইয়া, শ্রীফলভিষুক পর্য্যন্ত গিয়াছে, তাহার পশ্চিমে [গিয়া] বিল্বঙ্গর্দ্ধস্রোতিকার গঙ্গিনিকায় গিয়া প্রবিষ্ট হইয়াছে। পালিতকের সীমা দক্ষিণে কাণা-দ্বীপিকা, পূর্ব্বে কোণ্ঠিয়া-স্রোতঃ, উত্তরে গঙ্গিনিকা, পশ্চিমে জেনন্দায়িকা[১] এই গ্রামের শেষ সীমায় পরকর্ম্মকৃদ্বীপ,[২] স্থালীক্কট-“বিষয়ের” অধীন আম্রষণ্ডিকা-“মণ্ডলের” অন্তর্গত গো-পিপ্পলীগ্রামের সীমা,—পূর্ব্বে উড্রগ্রামমণ্ডলের পশ্চিম সীমা, দক্ষিণে জোলক, পশ্চিমে বেসানিকা নামক খাটিকা, উত্তরে উড্রগ্রামমণ্ডলেব সীমায় অবস্থিত গোপথ[৩] এই গ্রামচতুষ্টয়ে সুবিদিত [সমুপগত] রাজ-রাজনক,[৪] রাজপুত্র, রাজামাত্য, সেনাপতি, বিষয়পতি, ভোগপতি, ষষ্ঠাধিকৃত, দণ্ডশক্তি, দণ্ডপাশিক, চৌরোদ্ধরণিক, দৌঃসাধসাধনিক, দূতখোল-গমাগমিক, অভিত্বরমাণ, হস্ত্যধ্যক্ষ, অশ্বাধ্যক্ষ, গবাধ্যক্ষ, মহিষাধ্যক্ষ, ছাগাধ্যক্ষ, মেষাধ্যক্ষ, নাকাধ্যক্ষ, বলাধ্যক্ষ, তরিক, শৌল্কিক, গৌল্মিক, তদাযুক্তক, বিনিযুক্তক, প্রভৃতি রাজপাদোপজীবিসকল,—এবং অকথিত আরও চাটভটজাতীয় যথাকালবাস্তব্য লোকসকল; জ্যেষ্ঠকায়স্থ মহামহত্তর দাশগ্রামিক প্রভৃতি বিষয়ব্যবহারী সকল; করণ ও প্রতিবাসী ক্ষেত্রকরসকল,[৫] ইহাদিগকে ব্রাহ্মণসম্মানপূর্ব্বক [অর্থাৎ অগ্রে ব্রাহ্মণের সম্মান করিয়া, পরে ইহাদিগকে যথাযোগ্যভাবে সম্মান করিয়া,] জানাইতেছেন ও আজ্ঞা করিতেছেন যে,—আপনাদিগের সম্মতি হউক, মহাসামন্তাধিপতি শ্রীনারায়ণ বর্ম্মা দূতক যুবরাজ শ্রীত্রিভুবনপাল[৬] দ্বারা আমাদিগকে জানাইয়াছেন যে,—“মাতাপিতার ও নিজের পুণ্যাভিবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে আমরা “শুভস্থলী”-নামক স্থানে দেবগৃহ নির্ম্মাণ করাইয়াছি, সেই দেবগৃহ-রক্ষক লাটদেশীয় ব্রাহ্মণ[৭] ও দেবপূজক প্রভৃতি
- ↑ বটব্যাল মহাশয় “জৈনন্যায়িকা” পাঠ উদ্ধৃত করিয়া গিয়াছেন।
- ↑ পরকর্ম্মকৃদ্বীপ burning ground of the village বলিয়া বটব্যাল মহাশয় কর্ত্তৃক ব্যাখ্যাত হইয়াছে।
- ↑ সংজ্ঞা শব্দগুলির অর্থবোধ করা কঠিন। সংস্কৃত ভাষা-নিবদ্ধ তাম্রশাসনে উল্লিখিত হইলেও, সকল শব্দ সংস্কৃত ভাষার সুপরিচিত শব্দ বলিয়া বোধ হয় না। অনেক “দেশজ”-শব্দকেও সংস্কৃতের আবরণ প্রদান করা হইয়াছে বলিয়া বোধ হয়। যথা,—“খাটিকা”-শব্দ “খাড়ি” হইতে পারে।
- ↑ “রাজনক” শব্দটি “রাজন্যক”-শব্দের অপভ্রংশ বলিয়াই বোধ হয়।
- ↑ এই সকল রাজপুরুষাদির রাজপদের ও রাজকার্য্যের বিবরণ যথাযথভাবে নির্ণয় করিবার উপায় নাই। যতদূর জানিতে পারা গিয়াছে, তাহা “উপসংহারে” উল্লিখিত হইবে।
- ↑ এই তাম্রশাসনে “যুবরাজ ত্রিভুবন পালের” নাম উল্লিখিত আছে। ইহা দেবপালদেবের নামান্তর কিনা, জানা যায় নাই। তজ্জন্য অনেকে অনুমান করিয়াছেন,—ধর্ম্মপালদেব বর্ত্তমান থাকিতেই, ত্রিভুবনপাল পরলোক গমন করায়, দেবপালদেব পিতৃ-সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন! ইহার কোনরূপ প্রমাণ এখনও আবিষ্কৃত হয় নাই।
- ↑ লাটদেশ বর্ত্তমানে গুজরাট নামে পরিচিত।
২৬