বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:গৌড়লেখমালা (প্রথম স্তবক).djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
দেবপালদেবের তাম্রশাসন।



বঙ্গানুবাদ।

ওঁ স্বস্তি॥

(১)

 যে সর্ব্বার্থভূমীশ্বর সুগত [বুদ্ধদেব] প্রবল [অধ্যাত্ম] শক্তিসমূহের আবির্ভাব-প্রভাবে ত্রিলোকনিবাসী[] প্রাণিবর্গের [সুপরিচিত] সিদ্ধিপথ অতিক্রম করিয়া [নির্বৃতি] নির্ব্বাণ-লোক লাভ করিয়াছিলেন, সেই পরপ্রয়োজন-সম্পাদন-স্থিরচেতা সৎপথ-প্রবর্ত্তক ভগবান্ সিদ্ধার্থদেবের সিদ্ধি প্রজাবর্গের সর্ব্বোত্তম সিদ্ধিবিধান করুক্।[]

(২)

 অনুপম সৌভাগ্যশালী গোপাল[দেব] লক্ষ্মীর সপত্নী পৃথিবী [দেবীর] পতি হইয়াছিলেন, বিনয়িবর্গের দৃষ্টান্তস্থল সেই রাজার শাসন-সময়ে পৃথু সগর প্রভৃতি [পুরাণ-প্রসিদ্ধ] নৃপতিবৃন্দ শ্রদ্ধেয় [বিশ্বাসযোগ্য ঐতিহাসিক ব্যক্তি] বলিয়া স্বীকৃত হইয়াছিলেন।[]

(৩)

 তিনি সমুদ্র পর্য্যন্ত ধরণীমণ্ডল জয় করিবার পর, আর [যুদ্ধোদ্যমের] প্রয়োজন নাই বলিয়া, মদমত্ত রণকুঞ্জরগণকে বন্ধন হইতে মুক্তিদান করিলে, তাহারা স্বাধীনভাবে বনগমন করিয়া, আনন্দাশ্রুপূর্ণ-লোচনে আনন্দাশ্রুপূর্ণলোচন বন্ধুগণকে পুনরায় দর্শন করিয়াছিল।

  1. বৌদ্ধমতে লোকত্রয়ের নাম কামধাতু, রূপধাতু ও অরূপধাতু,—তদূর্দ্ধে নির্ব্বাণ লোক। তজ্জন্য এই শ্লোকে ত্রৈলোক্য-শব্দের পরিবর্ত্তে “ত্রৈধাতুক” শব্দ ব্যবহৃত হইয়াছে। ডাক্তার ওয়াডেল তাঁহার সুবিখ্যাত গ্রন্থে [Buddhism of Tibet pp. 84-89] এই ত্রিলোক-তত্ত্ব ব্যাখ্যা করিবার জন্য লিখিয়া গিয়াছেন,—
     “The Buddhists divide every universe into three regions, in imitation, apparently, of the Brahmanic Bhavanatraya, substituting for the physical categories (Bhu earth, Bhuva heaven, and Svar space) of the Brahmans, ethical categories of Desire (Káma), Form (Rupa), and Form-lessness (Arupa) which collectively are known as the “Three Regions”. এই ত্রিলোক “ত্রিধাতু”-নামে কথিত। তন্মধ্যে কামলোক [কামধাতু] সর্ব্বনিম্নে অধিষ্ঠিত; এবং পৃথিবী ও ছয়টি দেবলোক তাহার অন্তর্গত। ইহার উপরে ব্রহ্মলোক, তাহার নাম “রূপধাতু”, তাহা চারিটি ধ্যান-লোকে বিভক্ত, এবং তাহাই ষোড়শ ব্রহ্ম লোক নামে কথিত। নির্ব্বাণ-লোকের নিম্নে এবং পূর্ব্বোক্ত লোকদ্বয়ের ঊর্দ্ধে “অরূপধাতু” নামক চারিটি সর্ব্বোচ্চ ব্রহ্ম-লোক। প্রবল অধ্যাত্মশক্তি সমূহের আবির্ভাব-প্রভাবে শাক্যসিংহ এই ব্রহ্মলোকের ঊর্দ্ধে অবস্থিত নির্ব্বাণ-লোক অধিকার করিয়াছিলেন।
  2. অধ্যাপক কিল্‌হর্ণ এই শ্লোকের দুইটি অর্থের সন্ধান করিয়া, রাজার পক্ষেও একটি অর্থ প্রকটিত করিবার অভিপ্রায়ে লিখিয়া গিয়াছেন,—Like the verses at the commencement of the Dinájpur, Bhágulpur and Ámgáchi plates, this verse is applicable both to the founder of the Buddhist religion (Sidhártha, Sugata, Sarvárthasiddha) and the king, in this case Devapáladeva, who issued this grant. এই শ্লোকটি সুকৌশলে রচিত ও ধ্বন্যাত্মক। ইহাতে বৌদ্ধমতের প্রাধান্য কীর্ত্তিত হইয়াছে।
  3.  পৃথু সগর প্রভৃতি পুরাণ-প্রসিদ্ধ নরপালগণের যে সকল অলৌকিক গুণাবলী চিরপরিচিত, তাহা

 কাল্প-

৪১