(৪)
সেই গুণশালী দ্বিজবর, রজ্জেকা নাম্নী গৃহিণীর সহিত সংযুক্ত হইয়া, অমলকলা-সংযুক্ত [পূর্ণ] চন্দ্রের ন্যায় শোভা প্রাপ্ত হইতেন। পতিব্রতাগণের কথা চিন্তা করিবার সময়ে, লোকে সর্ব্বাগ্রে সেই [রজ্জেকা দেবীর] নাম সংকীর্ত্তন করিয়া থাকে।
(৫)
তাঁহাদিগের একটি পুত্র জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। [তাঁহাদের ন্যায় দম্পতীর পুত্র বলিয়া] অতিশয়[১] বিবেকী [সেই পুত্র], পরলোক-বুদ্ধিতে [পরিচালিত হইয়া] সকল ভোগসুখ-মনোজ্ঞ পিতৃগৃহে আসক্তিশূন্য হইয়া, সন্ন্যাসাবলম্বনে সুগত-শাসন স্বীকার করিবার জন্য, বাল্যকাল হইতেই, [তাহা] জ্ঞাত হইয়াছিলেন।
(৬)
সমগ্র বেদের অধ্যয়ন এবং শাস্ত্রচিন্তা সমাপ্ত কবিয়া, সেই শ্রীমান্ কণিষ্ক-মহাবিহারে[২] উপনীত হইয়া, ক্রোধোপশান্তিসাধনে[৩] প্রশংসাপ্রাপ্ত সর্ব্বজ্ঞশান্তি নামক আচার্য্যবরের [উপদেশের] অনুসরণ করিয়া, তপস্যা করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন।
(৭)
বিশুদ্ধগুণসঞ্জাত-বহুকীর্ত্তিবিভূষিত [সেই] সর্ব্বজ্ঞশান্তির অনুরূপ গুণ-শীল-যশঃ উপার্জ্জন করিয়া, বীরদেব নামক তাঁহার কলিকলঙ্ক-বিমুক্তকান্তি সেই নয়নাভিরাম শিষ্য বালেন্দুবৎ সর্ব্বদা মুনিজনগণের বন্দনা লাভ করিয়াছিলেন।
(৮)
অনন্তর সেই শ্রীমান্ একদা বজ্রাসন[৪] বন্দনা করিবার অভিপ্রায়ে, মহাবোধিতে [বুদ্ধগয়া-
- ↑ “সুতরাং”-শব্দ অবধারিতার্থ-প্রতিপাদক (সু + তরপ্) এবং “কলিত” শব্দ প্রাপ্ত বা বিদিত অর্থ-প্রতিপাদক। মূল প্রশস্তির “অভ্যুপেতুম্”-শব্দ “অভ্যুপৈতুম্”-শব্দের লিপিকর-প্রমাদ। অঙ্গীকার বা স্বীকার অর্থে ইহা ব্যবহৃত হইয়াছে।
- ↑ আধুনিক পেশোয়ার-নগরের উপকণ্ঠে যে কণিষ্ক-স্তূপের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হইয়াছে, [ইউয়ান্ চোয়াং-এর মতে] তাহার পশ্চিমে মহারাজ কণিষ্ক-নির্ম্মিত মহাবিহার অবস্থিত ছিল। আল্বেরুণী “কণিক-চৈত্য” বলিয়া ইহার উল্লেখ করিয়া গিয়াছেন। Watter’s Vol. I, p. 208.
- ↑ এই শ্লোকের “प्रशम-प्रशस्य” পদটি গভীরার্থ-বিজ্ঞাপক। মল্লিনাথ [কিরাতার্জ্জুনীয়ে দ্বিতীয় সর্গে ৩২ শ্লোকে] “प्रशम” শব্দের ব্যাখ্যায় লিখিয়া গিয়াছেন,—“प्रशमः क्रोधोपशान्तिरिति।” এই অর্থেই যে “प्रशम”-শব্দ সাধারণতঃ ব্যবহৃত হইত, “মহাবীর-চরিতে” [দ্বিতীয় অঙ্কে] তাহার একটি সুপরিচিত উদাহরণ প্রাপ্ত হওয়া যায়। যথা,—
“एष मे प्रशमस्य कर्कशः परिणामः।”
বুদ্ধশান্তি, রত্নাকরশান্তি প্রভৃতি যতিগণের নাম সুবিদিত। সর্ব্বজ্ঞশান্তিও তদ্রূপ একজন যতির নাম।
- ↑ The platform or terrace which supported the holy pippal tree was called Bodhimanda, or “the ornament of the Bodhi tree”, and on it was raised the famous Vajrásana or dia-
৫১