(১৮)
তিনি জমদগ্নিকুলোৎপন্ন সম্পন্ন-ক্ষত্র-চিন্তক[১] [অপর] দ্বিতীয় রামের [পরশুরামের] ন্যায়, রাম [অভিরাম], শ্রীগুরবমিশ্র[২] এই আখ্যায় [পরিচিত ছিলেন]।
(১৯)
[পাত্রাপাত্র-বিচার]-কুশল গুণবান্ বিজিগীষু শ্রীনারায়ণপাল [নরপতি] যখন তাঁহাকে মাননীয়[৩] মনে করিতেন, তখন আর তাঁহার অন্য [প্রশস্তি] প্রশংসা-বাক্য কি [হইতে পারে?]
(২০)
তাঁহার বাগ্বৈভবের কথা, আগমে[৪] ব্যুৎপত্তির কথা, নীতিতে পরম নিষ্ঠার কথা, মহতের গুণ-কীর্ত্তনে আসক্তির কথা, জ্যোতিষে অধিকারের কথা, এবং বেদার্থ-চিন্তা-পরায়ণ অসীম-তেজঃসম্পন্ন তদীয় বংশের কথা, ধর্ম্মাবতার[৫] ব্যক্ত করিয়া গিয়াছেন।
- ↑ পরশুরাম-পক্ষে অর্থ—“সম্পন্ন ক্ষত্রিয়দিগের নিধন-চিন্তাকারী”; মিশ্র-পক্ষে অর্থ—“সম্পৎ-নক্ষত্রচিন্তক” [জ্যোতিষিক গণনাকারী]।
- ↑ অধ্যাপক কিল্হর্ণ ইঁহার নাম “রামগুরব মিশ্র” বলিয়া লিখিবার পর হইতে, অনেকেই “রামগুরব” লিখিতে আরম্ভ করিয়াছেন। “শ্রীগুরব মিশ্রাখ্য” বলিয়া কবি প্রকৃত নামেরই উল্লেখ করিয়া গিয়াছেন; রাম-শব্দ তাহার বিশেষণ রূপে ব্যবহৃত হইয়াছে।
- ↑ নারায়ণপালদেবের [ভাগলপুরে আবিষ্কৃত] তাম্রশাসনে [৫২-৫৩ পংক্তিতে] ভট্টগুরব “দূতক” বলিয়া উল্লিখিত। ধর্ম্মপালের এবং দেবপালের তাম্রশাসনে যুবরাজ ত্রিভুবনপাল এবং যুবরাজ রাজ্যপাল “দূতক” বলিয়া উল্লিখিত। ভট্টগুরব কিরূপ সমাদরের পাত্র ছিলেন, ইহাতেই তাহার পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়।
- ↑ অধ্যাপক কিল্হর্ণ “traditional lore” বলিয়া “আগম”-শব্দের ব্যাখ্যা করিয়া গিয়াছেন। এরূপ অর্থে “আগম”-শব্দের ব্যবহার দেখিতে পাওয়া যায় না। সকল শাস্ত্রই “আগম”; তন্মধ্যে তন্ত্র-শাস্ত্রই “আগম” নামে প্রসিদ্ধ। সকল তন্ত্র “আগম” নহে; সপ্ত-লক্ষণ-সংযুক্ত কোন কোন তন্ত্রই “আগম” নামে কথিত। যথা—
“आगतं पञ्चवक्त्रात्तु गतञ्च गिरिजानने।
मतञ्च वासुदेवस्य तस्माद् आगम उच्यते।”
यह्वा
मग्नस्तस्या हृदम्भोजे तस्मादागम उच्यते।”
“আগম” বেদাঙ্গ বলিয়াই ব্যাখ্যাত হইত। মেরুতন্ত্রে তাহা উল্লিখিত আছে। যথা—
“न वेदः प्रणवं त्यक्ता मन्त्रो वेदाङ्ग श्चागमः स्मृतः।”
বিচার-কার্য্যে ব্যবহৃত সাক্ষ্যপত্রাদি “আগম” নামে ব্যবহার-মাতৃকায় উল্লিখিত আছে। মনুসংহিতায় পারিভাষিক অর্থে “আগম” শব্দ ব্যবহৃত হইয়াছে বলিয়া বোধ হয়। যথা—
“नाधर्म्मेनागमः कश्चिन्मनुष्यान् प्रति वर्त्तते।”
- ↑ এই শ্লোকের “ধর্ম্মাবতার”-শব্দ রাজাকে সূচিত করিতেছে বলিয়াই বোধ হয়। তিনি যে আপন তাম্রশাসনে ভট্টগুরবের প্রশংসা করিয়াছিলেন, তাহা “ভাগলপুর-লিপিতে” দেখিতে পাওয়া যায়।
৮৩