পাতা:গৌড়ীয়-সাহিত্য.djvu/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৌড়ীয়-সাহিত্য '& ‘পষ্ঠাবলী’—সকলই নৈমিষ-সাহিত্য-কুমুম-কাননের কৃষ্ণকণ্ঠোৎসব-মালিক। অধিক কি, আচাৰ্য্য শঙ্কর ভগবদাদেশে চিদবিলাস-রাহিত্যবাদের প্রচারক হ’লেও নৈমিষ-সাহিত্যের প্রতিপাদ্য চেল-চোরাদি-লীলা গোবিন্দীষ্টকাদিতে তটস্থভাবে বর্ণন ক'রে দূর হতে নৈমিষ-সাহিত্যকে স্পর্শ ক’রেছেন । এই নৈমিষ-সাহিত্য সহস্ৰ-দীপ দিয়ে “গোবিন্দমাদি পুরুষং তমহং ভজামি” স্তোত্র পাঠ করতে করতে যেদিন পূজারী চতুর্মুখ স্বরাট খামন্বন্দরের আরতি ক’রছিলেন, আর সেই আরতির শঙ্খ-সলিল দেবতাগণের মাথায় প্রক্ষিপ্ত হচ্ছিল, সেদিন পয়স্বিনীর তটে আদিকেশবের মন্দিরে গৌড়ীয়গণ সেই শঙ্খ-সলিল লুটে নিয়েছিলেন । গৌড়পুরের জয়-দেওয়া-দেবতা সেই শঙ্খ-সলিল হ’তে সাহিত্য-সুরধুনীর বাণ এনেছিলেন—যে বাণ বিশ্বসাহিত্যকে ক্রোড়ীভূত ক’রে সকল সাহিত্যের শিরোদেশে “মুখদং শুভদং ভবসারং” গান গেয়ে নৃত্য করছে। সে-দিন হ’তেই গৌড়ীয়-সাহিত্যের নবযুগ আরম্ভ হলো । গৌড়েশ্বর লক্ষ্মণসেনের সভা-কবি জয়দেবের মধুর-কোমল-কান্তপদাবলী, গুণরাজ খাঁর শ্ৰীকৃষ্ণবিজয়, মৈথিল-গৌড়ীয়-মহাকবি বিদ্যাপতির মধুর পদাবলী, চণ্ডীদাসের মনঃপ্রাণআকুল-করা পদগুলি, রায়ের নাটকগীতি গৌড়পুর, মিথিলা ও ওটু দেশের রাজসভা-প্রাঙ্গণ মুখরিত ক’রে নৈমিষ-সাহিত্য সরস্বতীর সহস্ৰ জয় ঘোষণা করতে থাকূল ।