পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৭২
গ্রহ-নক্ষত্র

 আমাদের পৃথিবীতে জল আছে। এখানে জলে কি কাজ করে তাহা তোমরা হয় ত দেখিয়া থাকিবে। বৃষ্টির জল ও বরফ-গলা জল বড় বড় পাহাড়কে ভাঙিয়া চূরিয়া দেয়, উঁচু জমিকে নীচু করে এবং কখনো কখনো নীচু জমিকেও উঁচু করে। জল যেন প্রতিদিনই পৃথিবীকে নূতন করিয়া গড়িতেছে। কিন্তু আজ তিন শত বৎসর ধরিয়া জ্যোতিষীরা চাঁদকে দিনের পর দিন দেখিতেছেন, তাহার ম্যাপ্ আঁকিতেছেন, কিন্তু এত বৎসরেও চাঁদের উপরকার মাটি-পাথরের একটুও পরিবর্ত্তন দেখেন নাই। ইহা দেখিয়াও তোমরা বলিতে পার চাঁদে জল নাই।

 চাঁদে বাতাসও নাই। বাতাসে কি কাজ করে তোমরা জান না কি? ঠিক জলেরই মত তাহার কাজ। লোহাকে কিছু দিন বাতাসে ফেলিয়া রাখিলে যেমন তাহাতে মরিচা ধরে এবং এক-একটু করিয়া তাহা ক্ষয় পাইয়া যায়, পাথরের উপরে ও মাটির উপরে বাতাস ঠিক ঐ রকমেই কাজ করে। পাথরকে এবং শক্ত মাটিকে বাতাস এক-একটু করিয়া ধূলা করিয়া দেয় এবং পরে সেই ধূলাকে উড়াইয়া দূরে ছড়াইয়া ফেলে। ইহাতে ক্রমে ক্রমে পাহাড় ও উঁচু মাটির ঢিবি ছোট হইয়া আসে। কিন্তু চাঁদের পাহাড় ও উঁচু জমির এ-পর্য্যন্ত একটুও ক্ষয় দেখা যায় নাই। কাজেই তাহাতে বাতাস আছে ইহা কেমন করিয়া বলি?

 চাঁদে যে বাতাস বা জলের বাষ্প প্রভৃতি কোনো জিনিস নাই, তাহার আর একটা প্রমাণের কথা বলি। তোমরা নিশ্চয়ই দেখিয়াছ, খুব গভীর বাতাসের ভিতর দিয়া দেখিলে সব জিনিসকেই ম্লান বা অস্পষ্ট দেখা যায়। সকাল বেলা যখন সূর্য্য উঠে তখন তাহাকে কি রকম ম্লান দেখায় তাহা তোমরা দেখ নাই কি? তখন তাহার দিকে বেশ তাকানো যায়। অস্তের পূর্ব্বে সূর্য্যকে ঠিক ঐ-রকমই ম্লান