পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চাঁদের মৃত্যু
৯৩

এবং চাঁদের চারিদিকে তখনো যে-সব হাল্‌কা রকমের বাষ্প ছিল তাহা দিয়া জলের সৃষ্টি হইয়াছিল। এই সময়টাই চাঁদের ভাল সময় ছিল,—তখন আমাদের এখনকার পৃথিবীরই মত চাঁদের সমুদ্র-ভরা জল ছিল, হয় ত আকাশ-ভরা বাতাসও ছিল। এখন হইতে কতদিন আগে চাঁদের এই সুখের জীবন আসিয়াছিল জানি না,—কিন্তু তখনো আমাদের পৃথিবী যে, ভয়ানক গরম ছিল এবং তাহাতে পশুপক্ষী মানুষ গাছপালা কিছুই জন্মিতে পারে নাই, তাহা নিশ্চয়।

 ইহার পরেই যখন চাঁদের সমস্ত দেহ ভিতর পর্য্যন্ত একেবারে ঠাণ্ডা হইয়া গিয়াছিল, তথনি তাহার সুখের জীবনে মৃত্যুর লক্ষণ একে একে দেখা দিতে আরম্ভ করিয়াছিল। গরম না থাকায় সমুদ্রের জল কতক মাটির ভিতরে প্রবেশ করিয়া বরফ হইয়া পড়িয়াছিল ও কতক চাঁদের দেহের নানা জিনিসের সঙ্গে মিশিয়া লোপ পাইতে আরম্ভ করিয়াছিল। চাঁদে বাতাস ছিল কিনা জানি না, যদি ছিলই ভাবিয়া লওয়া যায় তাহা হইলে উহাও এক একটু করিয়া চাঁদকে ছাড়িয়া মহাকাশের দিকে পলাইতে আরম্ভ করিয়াছিল। চাঁদের যেমন দেহখানি ছোট, তাহার টানও সেই রকম অল্প। বাতাসের মত চঞ্চল জিনিসকে সে টানিয়া রাখিতে পারিবে কেন?

 এই রকমে যখন চাঁদের ভিতরকার তাপ, সমুদ্র-ভরা জল, আকাশ-ভরা বাতাস একেবারে লোপ পাইয়াছিল, তখনি চাঁদের মৃত্যু হইয়াছিল।