জন্য তাঁহাদিগকে হিসাবে বসিতে হইল। রেলের গাড়ী যখন ষ্টেশনে পৌঁছিতে দেরি করে, তখন ষ্টেশন-মাষ্টার বুঝিয়া লন, পথে তাহার কল বিগ্ড়াইয়া গিয়াছে, না হয় তাহাকে কোনো মাঝ-ষ্টেশনে আটক্ থাকিতে হইয়াছে। কিন্তু এন্কির কল ত বিগ্ড়াইবার নয়,—স্থির হইল, পথে তাহাকে কেহ আট্কাইয়া রাখিয়াছিল।
যে পথে এন্কি সূর্য্যকে ঘুরিয়া বেড়ায়, তাহার কাছে কোনো গ্রহ বা উপগ্রহ ছিল কি না, পণ্ডিতেরা ম্যাপ খুলিয়া তাহা দেখিতে লাগিলেন। দেখা গেল, ঐ সময়ে বুধগ্রহ এন্কির পাশে ছিল। পণ্ডিতেরা হাঁফ্ ছাড়িয়া বাঁচিলেন,—সকলেই বুঝিলেন, ছোট ধূমকেতু এন্কিকে পথের মাঝে পাইয়া বুধগ্রহ তাহাকে টানাটানি করিয়া একটু মজা করিয়াছিল, তাই ধূমকেতুর ফিরিয়া আসিতে এত বিলম্ব!
যাহা হউক এই টানাটানিতে এন্কির একটু কষ্ট হইলেও জ্যোতিষীদের খুব সুবিধা হইয়া গিয়াছিল। সে কত দিন দেরি করিয়াছিল তাহা জ্যোতিষীরা জানিতেন। কত জোরে টানিলে এই রকম দেরি হইতে পারে, তাঁহারা অঙ্ক কষিয়া তাহাও স্থির করিয়াছিলেন। তার পরে বুধের শরীরে কি পরিমাণ পদার্থ আছে, ইহা হইতেই স্থির হইয়াছিল। আমরা দেখিয়াছি, মোটা মানুষের গায়ের জোর ছিপ্ছিপে লোকের জোরের চেয়ে সব সময়ে বেশি হয় না। কুস্তিগীর পালোয়ানেরা মোটা নয়। খুব মোটা লোকেরা এই সব পালোয়ানদের সহিত লড়িতে গিয়া প্রায়ই হারিয়া যায়। কিন্তু গ্রহনক্ষত্রদের নিয়ম অন্য রকম; ইহাদের মধ্যে যে বেশি মোটা তাহার জোরও তেমনি বেশি। কাজেই কোনো গ্রহের টানের পরিমাণ জানিতে পারিলে, সে ওজনে কত তাহা ঠিক্ করা কঠিন হয় না।
এই রকমেই জ্যোতিষীরা ঠিক্ করিয়াছেন—একুশটা বুধগ্রহ একটা পৃথিবীর সমান।