পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১০৬
গ্রহ-নক্ষত্র

পুরুষ বলিয়া লেখা হইয়াছে, এবং কোনো পুস্তকে তাহাকে স্ত্রীলোক বলিয়া বর্ণনা করা হইয়াছে। উড়িষ্যায় কণারকের ভাঙা মন্দিরে শুক্রগ্রহের একটা চেহারা পাথরে খোদা আছে। সেখানে শুক্রকে স্ত্রীলোকের আকারই দেওয়া হইয়াছে।

 শুক্রের জন্ম-সম্বন্ধে আমাদের পুরাণে একটি মজার গল্প আছে। শ্রীকৃষ্ণের পুত্র প্রদ্যুম্নের নাম তোমরা হয় ত শুনিয়াছ। ইনি জন্মগ্রহণ করিয়া সম্বর নামে এক অসুরকে বধ করিবেন বলিয়া স্থির ছিল। এই অসুরটি ভয়ানক অত্যাচারী ছিল, স্বর্গ মর্ত্ত্য পাতালের সকলেই ইহাকে ভয় করিয়া চলিত! প্রদ্যুম্নের হাতে মৃত্যু হইবে শুনিয়া সম্বর ভয়ানক চিন্তিত হইয়া পড়িল এবং অনেক ভাবিয়া চিন্তিয়া স্থির করিল, প্রদ্যুম্নের জন্ম হইবামাত্র তাহাকে হত্যা করা ব্যতীত নিজেকে বাঁচাইবার আর উপায় নাই। শ্রীকৃষ্ণের ঘরে প্রদ্যুম্ন জন্মগ্রহণ করিলেন। শ্রীকৃষ্ণ জানিতেন যে, তাঁহার শিশু পুত্রটিকে হত্যা করিবার জন্য সম্বর খুব চেষ্টা করিবে। তাই তিনি ঘরের চারিদিকে কড়া পাহারা বসাইয়া দিলেন। কিন্তু সম্বরের হাত হইতে শিশু প্রদ্যুম্নকে রক্ষা করা হইল না। কোন্ এক সুযোগে ছয় দিনের শিশু প্রদ্যুম্নকে সম্বর চুরি করিয়া একেবারে সমুদ্রের জলে ফেলিয়া দিল। সে ভাবিল, প্রদ্যুম্ন বুঝি মরিয়া গেলেন, কিন্তু সমুদ্রের জলে ডুবিয়াও প্রদ্যুম্নের মৃত্যু হইল না। সমুদ্রের একটা বড় মাছ তাহাকে গিলিয়া ফেলিল। তোমরা হয়ত ভাবিতেছ, মাছটা প্রদ্যুম্নকে খাইয়া হজম করিয়া ফেলিল; কিন্তু তাহা হইল না। ছয় দিনের শিশু প্রদ্যুম্ন মাছের পেটের ভিতরকার গরমে বেশ আরাম বোধ করিতে লাগিলেন এবং দিনে দিনে সেখানে বড় হইতে লাগিলেন।

 এদিকে এক দিন ঐ মাছটি একজন জেলের জালে ধরা পড়িয়া গেল। প্রকাণ্ড মাছটিকে পাইয়া জেলের মনে খুব আনন্দ হইল।