পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১১০
গ্রহ-নক্ষত্র

শুক্রের সমান হয় না। কিন্তু শুক্রের এত আলো কোথা হইতে আসে? সে পৃথিবীর চেয়ে সূর্য্যের কাছে আছে, এজন্য আমরা সূর্য্য হইতে যে তাপ ও আলো পাই, শুক্র তাহারি দ্বিগুণ তাপ-আলো পায়। কিন্তু তাহাতেই কি শুক্র এত উজ্জ্বল? বুধগ্রহটি শুক্রের চেয়ে সূর্য্যের কাছে আছে, তবে তাহাকে কেন এত উজ্জ্বল দেখায় না?

 আমি যে-সব প্রশ্ন করিলাম, অনেক দিন আগে জ্যোতিষীরা পরস্পরকে এই সব প্রশ্নই জিজ্ঞাসা করিতেন, কিন্তু ভাল উত্তর তাঁহাদের কাছে পাওয়া যাইত না। কেহ বলিতেন, সূর্য্য যেমন নিজে তাপ ও আলো দেয়, শুক্রও তেমনি নিজে তাপ-আলো দেয়। কিন্তু আজকালকার জ্যোতিষীরা বুড়ো জ্যোতিষীদের এই রকম কথায় বিশ্বাস করেন না। তাঁহারা দেখিয়াছেন, শুক্রগ্রহটি আমাদের পৃথিবী ও চাঁদেরই মত জিনিস, সুতরাং তাহার নিজের আলো নাই! সূর্য্যের আলো গায়ে লাগিলেই সে আলোকিত হয়।

 সকল গ্রহ-নক্ষত্রদের চেয়ে কেন শুক্রকে বেশি উজ্জ্বল দেখায় তাহা আধুনিক জ্যোতিষীরাই স্থির করিয়াছেন। তাঁহারা বলেন, শুক্রের আকাশে বাতাস আছে এবং সেই বাতাসে মেঘ ভাসে। সূর্য্যের আলো এই সব শাদা মেঘের উপরে পড়িয়া এত উজ্জ্বল দেখায়। কেহ কেহ আবার একথাতেও বিশ্বাস করেন না। তাঁহারা বলেন, শুক্রের আকাশে খুব ঘন বাতাস বা ঐরকমের স্বচ্ছ বাষ্প আছে, এবং তাহাতে ধূলার কণা ইত্যাদি খুব ছোট ছোট জিনিস ভাসিয়া বেড়াইতেছে। সূর্য্যের আলো ঐসব কণার উপরে পড়িয়াই শুক্রকে এত উজ্জ্বল করিয়াছে।

 শুক্রের ছবিটা দেখ, তাহাতে মেঘের মত অনেকগুলি কালো কালো দাগ দেখিতে পাইবে। এইগুলিকেই এক দল পণ্ডিত মেঘের চিহ্ন বলিতেন। এখন সেগুলিকে শুক্রের উপরকার উঁচুনীচু মাটির চিহ্ন বলা হইয়া থাকে।