পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মঙ্গল
১২১

 মঙ্গলের খালের সম্বন্ধে দুই দলের কথাই বলা গেল। এক দলের কথা আর এক দলের কথার ঠিক্ উল্‌টা। এখনো দুই দলের মধ্যে বিষয়টা লইয়া ঝগড়া-ঝাঁটি ও তর্ক-বিতর্ক চলিতেছে। এজন্য কোন্ দলের কথা সত্য, এখন তোমাদিগকে বলিতে পারিলাম না।

 কিন্তু ইহা ঠিক্ যে, মঙ্গলে যদি বুদ্ধিমান প্রাণী থাকে, তবে তাহারা আমাদের মত সুখী নয়। মঙ্গলে মেঘ হয় না এবং বৃষ্টিও হয় না। কাজেই আমাদের মত প্রাণীকে সেখানে থাকিতে হইলে জলের জন্য তাহাদিগকে দিবারাত্রি হাহাকার করিতে হয়। বৎসরের মধ্যে যখন একবারমাত্র বরফ-গলা জল আসিয়া খালগুলিকে ভরিয়া দেয়, হয় ত তখনি তাহাদিগকে সমস্ত বৎসরের পানীয় জল জোগাড় করিয়া রাথিতে হয়। কূয়ো খুঁড়িয়া জল পাইবার উপায় নাই, কারণ মঙ্গলের খুব নীচেকার মাটিও হয় ত সরস নয়। মঙ্গলে চাষ-আবাদ করাও দায়। বরফ-গলা জলের বন্যা আসিলে মঙ্গলবাসীদিগকে তাড়াতাড়ি চাষ-আবাদ করিয়া বৎসরের খোরাক মরাইয়ে পুরিয়া রাখিতে হয়। সুতরাং মঙ্গলের লোকেদের এই রকম জীবনকে কেমন করিয়া সুখের জীবন বলা যায়!

 তার পরে ভাবিয়া দেখ, সেই লম্বা লম্বা সোজা রেখাগুলি যদি সত্যই মঙ্গলের খাল হয়, তাহা হইলে খাটিয়া খুটিয়া খালগুলিকে ভাল অবস্থায় রাখাও মঙ্গলবাদীদের একটা প্রধান কাজ হইয়া পড়ে। মঙ্গলের সমস্ত খালের দৈর্ঘ্য প্রায় সাত লক্ষ মাইল; এত লম্বা খালগুলিকে ভাল অবস্থায় রাখিতে গিয়া মঙ্গলবাসীদিগকে যেরকম পরিশ্রম করিতে হয়, তাহা বোধ হয় পৃথিবীর মানুষে পারে না।

 মঙ্গল-গ্রহের এই সব কথা জানিয়া জ্যোতিষীরা বলেন, গ্রহটি প্রাণীর বসবাসের সম্পূর্ণ অযোগ্য না হইলেও, তাহা ক্রমে চাঁদের মত মরিতে চলিয়াছে। মঙ্গলে এককালে পৃথিবীরই মত ঘন বাতাস ছিল; কিন্তু