শনির চাকার কথা তোমাদিগকে পরে বলিব। এখন উহার আসল দেহটার কথাই বলা যাউক।
আয়তনে শনি বড় ছোট নয়। বৃহস্পতি সব চেয়ে বড়, তার নীচেই শনি। হিসাব করিলে দেখা যায়, সাতশত তিরাশীটা পৃথিবী জোড়া না দিলে একটা শনিকে নির্ম্মাণ করা যায় না। কিন্তু যে-সব পদার্থ দিয়া শনি প্রস্তুত, তাহা নিতান্ত হাল্কা,—আমাদের পৃথিবীর মাটি-পাথরের চেয়েও হাল্কা, এমন কি জলের চেয়েও হাল্কা। তাহা হইলে বুঝা যাইতেছে, শনির দেহে পৃথিবীর দেহের মত জমাট জিনিস কিছুই নাই,—ইহার হয় ত সবই বাষ্প। কিন্তু এই বাষ্প খুব ঘন অবস্থায় আছে; আর কিছু দিন গরম ছাড়িলে উহা জমাট বাঁধিতে থাকিবে।
পৃথিবী হইতে সূর্য্য কত দূরে আছে তাহা তোমাদিগকে আগে বলিয়াছি। শনি আমাদের কাছ হইতে তাহারি প্রায় নয় গুণ দূরে আছে। এত দূরে থাকা সত্ত্বেও দূরবীণ দিয়া শনির গায়ে কতকগুলি কালো কালো দাগ দেখিতে পাওয়া যায়। শনির ছবি দেখিলেই তোমরা ঐ দাগগুলিকে চিনিতে পারিবে। জ্যোতিষীরা বলেন, ঐগুলি উহার মেঘের চিহ্ন। কিন্তু তাই বলিয়া শনির মেঘকে পৃথিবীর মেঘের মত মনে করিয়ো না। শনির মেঘ কেবলই জলের বাষ্প নয়। সেখানকার মেঘে বৃষ্টিও হয় না,—নানা জিনিসের গরম বাষ্প একত্র হইয়া শনির আাকাশকে মেঘের মত আচ্ছন্ন করিয়া রাখে।
পৃথিবী প্রতি সেকেণ্ডে ঊনিশ মাইল করিয়া চলিয়াও সূর্য্যকে ঘুরিয়া আসিতে তিনশত পঁইষট্টি দিন সময় লয়। কিন্তু শনি সেকেণ্ডে ছয় মাইলের বেশি চলিতে পারে না, তার উপরে উহার পথটাও খুব লম্বা। এই দুই কারণে একবার সূর্য্যকে ঘুরিয়া আসিতে তাহার ত্রিশ বৎসর সময় লাগে। তাহা হইলে দেখা যাইতেছে, শনির এক