পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ইউরেনস্
১৫১

নিজের চেষ্টায় হার্সেল্ যেমন মহাপণ্ডিত হইয়াছিলেন, বোধ হয় কেহই এমন হইতে পারেন নাই।

 হার্সেল্ গরিবের ছেলে ছিলেন। এজন্য ছেলেবেলায় তাঁহার লেখাপড়া করা হয় নাই। গরিব বাপ কেমন করিয়া স্কুলের বেতন এবং বইয়ের খরচ জোগাইবেন? সেজন্য তিনি এক সৈন্যের দলে চাকুরী লইয়াছিলেন। তিনি বেশ গান-বাজনা করিতে পারিতেন, ঐ সৈন্যের বলে ব্যাণ্ড বাজানো তাঁর কাজ ছিল, হয় ত তিনি জয়ঢাক বাজাইতেন, না হয় ফ্লুট্ বাজাইতেন।

 যাহা হউক প্রায় দেড় শত বৎসর পূর্ব্বে য়ুরোপের হানোভারদের সঙ্গে ফরাসীদের লড়াই বাধিয়াছিল, তখন হার্সেল্‌কে লড়াইয়ে যাইতে হইয়াছিল। লড়াইয়ের সময়ে সৈন্যদের সকলকেই খুব কষ্ট স্বীকার করিতে হয়। হয় ত দুদিন খাওয়া হয় না; রাত্রিতে ঘুমের অবকাশ হয় না; শীতে বৃষ্টিতে খোলা মাঠের মাঝে পড়িয়া থাকিতে হয়। সৈন্যদের সঙ্গে যাইতে যাইতে হার্সেল্ একদিন রাত্রিতে অবসন্ন হইয়া মাঠের মাঝে এক নর্দ্দামার মধ্যেই শুইয়া পড়িলেন। কিন্তু শীতে হিমে তাঁর ঘুম হইল না; তিনি ভাবিতে লাগিলেন, সংসারের বিশেষ কোনো কাজে না লাগিয়া তাঁহার জীবনটা কি এই রকমেই শেষ হইবে? স্থির করিলেন, সৈন্যদের সহিত তিনি থাকিবেন না। যখন দলের লোকেরা দেই খোলা মাঠে শুইয়া ঘুমে অচেতন, তখন কাহাকেও কিছু না বলিয়া হার্সেল্ সৈন্যদল ত্যাগ করিয়া চলিতে লাগিলেন। তিনি পলাইয়া যাইতেছেন, এই খবর যদি অপর সৈন্যেরা জানিতে পারিত, তাহা হইলে হয় ত বন্দুকের এক গুলির আঘাতেই তাঁহার মৃত্যু হইত। কিন্তু তখন কেহ কিছু জানিতে পারিল না। পথে অনেক কষ্ট পাইয়া হার্সেল্ ইংলণ্ডে উপস্থিত হইলেন।

 বাড়িতে পৌঁছিলেন বটে, কিন্তু গরিব বাপ-মা হার্সেল্‌কে লইয়া