পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ইউরেনস্
১৫৭

 ঘড়ির কাঁটা যে, বাঁ হইতে ডাইনে যায়, ইহা তোমরা সকলেই দেখিয়াছ। কিন্তু কাঁটা দুটিকে তোমরা যদি ঘড়ির পিছন হইতে চলিতে দেখ, তবে তাহাদিগকে কোন্ দিকে পাক খাইতে দেখিবে বলিতে পার কি? এই অবস্থায় তোমরা উহাদিগকে ডাইন হইতে বাঁয়ে ঘুরিতে দেখিবে না কি? ইউরেনস্‌কে যে, আমরা উল্টা পাকে ঘুরিতে দেখি, তাহারও কারণ ঐ। ইউরেনস্ পৃথিবীর তুলনায় এমন অবস্থায় আছে যে, তাহার ঘুরপাক খাওয়াকে আমরা উল্টা দেখি মাত্র, কিন্তু সত্যই যে উল্টা পাকে ঘুরে না।

 এই সকল খবর ছাড়া আমরা ইউরেনস্-সম্বন্ধে আর বিশেষ কিছু জানি না। যে গ্রহ পৃথিবী হইতে এত দূরে আছে তাহার খবর ইহার বেশি জানাও সম্ভব নয়। সূর্য্য আমাদের কাছ হইতে এত দূরে থাকিয়াও চাঁদের মত বড় দেখায়। কিন্তু ইউরেনসে ঘদি লোক থাকিত, তাহা হইলে তাহারা সূর্য্যকে শুক্রের চেয়ে কখনই বড় দেখিত না। ভাবিয়া দেখ ইউরেনস্ কত দূরের বস্তু। এত দূরের গ্রহ-সম্বন্ধে আমরা অল্প দিনের মধ্যে যে-সব খবর পাইয়াছি, তাহাই কি যথেষ্ট নয়? দিন দিন নূতন যন্ত্র নির্ম্মিত হইতেছে। হয় ত আরো দশ কি বিশ বৎসর পরে তোমরা ইউরেনসের আরো অনেক নূতন খবর পাইবে।

 এত দূরে থাকা সত্বেও আমরা ইউরেনসের চারিটি চাঁদের অর্থাৎ উপগ্রহের সন্ধান পাইয়াছি। কিন্তু ইহাদের মধ্যে যেটি বড় তাহা আমাদের চাঁদের চেয়ে অনেক ছোট। মনে করিয়া দেখ, এত দূরের এত ছোট বস্তুর খবর জানা কত কঠিন। এই জন্যই আমরা চাঁদ কয়েকটির খবর বিশেষ কিছু জানিতে পারি নাই। ইহাদের দুটিকে হার্সেল্ সাহেবই আবিষ্কার করিয়াছিলেন; বাকি দুইটির বিষয় আমরা হার্সেলের মৃত্যুর পরে জানিতে পারিয়াছি। খুব বড় দূরবীণ ব্যবহার না করিলে শেষের চাঁদ দুটিকে দেখা যায় না।