পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
নেপ্‌চুন্
১৬৩

 নেপ্‌চুনের আবিষ্কার হইলে, তাহার আকৃতি-প্রকৃতি ও চলাফেরা সম্বন্ধে খবর সংগ্রহ করিতে বিলম্ব হয় নাই। দেশবিদেশের জ্যোতিষীরা রাত্রির পর রাত্রি দূরবীণ দিয়া নেপ্‌চুন্‌কে দেখিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন এবং নানা রকম হিসাবপত্র করিয়া অল্প দিনের মধ্যে উহার সকল খবর প্রকাশ করিয়াছিলেন।

 নেপ্‌চুন্ সূর্য্যের রাজ্যের শেষ সীমায় থাকিয়া ঘুরিতেছে, এজন্য সূর্য্য হইতে ইহা অনেক দূরে আছে। আমাদের কাছ হইতে সূর্য্য যত দূরে আছে, নেপ্‌চুন্ তাহারি ত্রিশ গুণ দূরে রহিয়াছে। সেখানে যদি জীবজন্তু বা মানুষ থাকিত, তাহা হইলে তাহারা সূর্য্যকে একটি ছোট নক্ষত্রের মত দেখিত। ভাবিয়া দেখ, নেপ্‌চুন্ কত দূরে আছে। এত দূরে আছে বলিয়াই তাহাকে খালি চোখে দেখা যায় না এবং ছোট দূরবীণেও দেখা যায় না।

 আকারে কিন্তু ইহা খুব ছোট নয়,—প্রায় পঁচিশটি পৃথিবীর সমান। কিন্তু ইহার আগাগোড়াই সম্ভবত হাল্‌কা বাষ্প দিয়া গড়া। তাই দেহটা এত বড় হইলেও, তাহার ওজন বেশি নয়। ওজনে উহা মোটে সতেরোটা পৃথিবীর সমান অর্থাৎ ইউরেনসের চেয়ে একটু ভারি।

 নেপ্‌চুন্ কত সময়ে সূর্য্যকে ঘুরিয়া আসে, তাহাও আমরা জানিতে পারিয়াছি। সে যে-পথে সূর্য্যকে ঘুরিয়া আসে তাহা সকলের চেয়ে বড়, তার উপরে প্রতি সেকেণ্ডে সে সাড়ে তিন মাইলের বেশি চলিতে পারে না। এই সব কারণে একবার সূর্য্যকে ঘুরিয়া আসিতে তাহার প্রায় একশত পঁইষট্টি বৎসর সময় লাগে।

 তাহা হইলে দেখ, নেপ্‌চুনের এক একটা বৎসর আমাদের এক শত পঁইষট্টি বৎসরের সমান। কি ভয়ানক ব্যাপার। আমরা যদি নেপ্‌চুনে গিয়া বাস করিতাম, তাহা হইলে নেপ্‌চুনের এক বৎসর বয়স হইবার অনেক আগে আমরা বুড়া হইয়া যাইতাম।