পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৭০
গ্রহ-নক্ষত্র

 তোমরা বোধ হয় ভাবিতেছ, অতিথিদিগকে এরকমে লাঞ্ছনা দেওয়া সূর্য্যের ভারি অন্যায়; কিন্তু এই ঘটনা বৎসরের মধ্যে অনেক দিনই ঘটে। জ্যোতিষীরা ইহার সাক্ষী। তাঁহারা প্রতি বৎসরেই অন্ততঃ আটটি দশটি নূতন অতিথিকে সূর্য্যের রাজ্যে প্রবেশ করিতে দেখিতেছেন এবং প্রত্যেকটিকেই সূর্য্য এই রকমে কষ্ট দিয়া ছাডিয়া দিতেছে, ইহা স্বচক্ষে দেখিতেছেন। এগুলির মধ্যে অনেকেই ছোট, তাই খালি চোখে আমরা তাহাদিগকে দেখিতে পাই না। জ্যোতিষীরা দূরবীণ দিয়া ইহাদের লাঞ্ছনা দেখিতে পান। যদি বড় ধূমকেতু হঠাৎ আসিয়া পড়ে, আমরা কেবল তখনি তাহাদিগকে খালি চোখে দেখিতে পাই।

 তাহা হইলে বুঝা যইতেছে, বাড়িতে কবে অতিথি আসিবেন, তাহা যেমন আমরা এক বৎসর ছমাস কি এক মাস আগেও জানিতে পারি না, সেই রকম আকাশে কবে ধূমকেতু উঠিবে তাহাও আমরা দুমাস ছমাস বা দশ দিন আগেও জানিতে পারি না। ইহারা হঠাৎ আসে এবং হঠাৎ চলিয়া যায়। যত বড় বড় ধুমকেতু দেখা গিয়াছে, তাহাদের প্রায় সকলেরই যাওয়া-আসা এই রকমেই হইয়াছে। কয়েক বৎসর আগে (১৯০৮ সালে) শীতকালে যে একটি বড় ধূমকেতুকে সন্ধ্যার সময়ে পশ্চিম আকাশে দেখা গিয়াছিল, তাহার কথা তোমাদের মনে আছে কি না জানি না। এটাও ঐ-রকম হঠাৎ আসিয়া দেখা দিয়াছিল, আবার কয়েক দিনের মধ্যে সূর্য্যের রাজ্য ছাড়িয়া পলাইয়া গিয়াছিল।

 ক্ষুধা-তৃষ্ণায় ছট্‌ফট্ করিতে করিতে পথিক বাড়ীতে আসিল। তাহাকে আহার করানো গেল, দুই বেলা তিন বেলা খাইল এবং শেষে চিরজীবনের মত বাড়িতে থাকিয়া গেল, এ-রকম ঘটনা তোমরা দেখিয়াছ কি? আমি কিন্তু স্বচক্ষে দেখিয়াছি।

 আমাদের বাড়িতেই একটি হিন্দুস্থানী পথিক ঐ রকমে আসিয়াছিল।