পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ধূমকেতুর আকৃতি-প্রকৃতি
১৮১

 ধূমকেতুদের লেজ বড় মজার জিনিস। এগুলি কখনই সূর্য্যের দিকে বিস্তৃত থাকে না; সূর্য্য যেদিকে থাকে, ধূমকেতুদের লেজগুলিকে সকল সময়ে তাহারি উল্‌টা দিকে দেখা যায়। বিড়াল কুকুর ভালুক বা সিংহ প্রভৃতি প্রাণীর একটার বেশি লেজ থাকে না, কিন্তু এক একটা ধূমকেতুর লেজ প্রায়ই দুইটা তিনটা দেখা যায়। লেজগুলি লম্বাও মন্দ নয়। জ্যোতিষীরা হিসাব করিয়া একটা ধূমকেতুর লেজকে প্রায় দশ কোটি মাইল লম্বা হইতে দেখিয়াছিলেন। কিন্তু লম্বা হইলে কি হয়,—উহাতে পদার্থ কিছুই থাকে না। আমরা আগেই বলিয়াছি, গোটা লেজকে গুটাইয়া দাঁড়িপাল্লায় ওজন করিলে, তাহা আধ্ সের তিন পোয়ার বেশি ভারি হয় না।

 ধূমকেতুদের লেজ যে কত অসার জিনিস, তাহার একটি গল্প বলি, শুন।

 ইংরাজি ১৭৭০ সালে একটি বড় ধূমকেতু দেখা গিয়াছিল। লেক্‌সেল্ নামে একজন জ্যোতিষী ইহার আবিষ্কার করেন, এজন্য লোকে ইহাকে লেক্‌সেলের ধূমকেতু বলিত। ঘুরিতে ঘুরিতে সে যখন সূর্য্য ও পৃথিবীর মাঝে আসিয়া দাঁড়াইল, তখন তাহার প্রকাণ্ড লেজ দেখিয়া জ্যোতিষীরা ভয় পাইয়া গেলেন। তাঁহারা ভাবিতে লাগিলেন, যদি ধূমকেতুর লেজটা একবার পৃথিবীর গায়ে আসিয়া লাগে বা তাহার মুণ্ডটা ধাক্কা দেয় তাহা হইলে বুঝি পৃথিবী চুরমার হইয়া যাইবে। লেক্‌সেল্ চেষ্টার ত্রুটি করিল না, একদিন সত্যই তাহার লম্বা লেজ পৃথিবীর গায়ে ঠেকিল। জ্যোতিষীরা ভাবিলেন, এবার বুঝি সর্ব্বনাশ হইল! কিন্তু পৃথিবীর তাহাতে কিছুই হইল না। এই লেক্‌সেলের ধূমকেতুকে পরে বৃহস্পতির কাছে বিলক্ষণ অপমানিত হইতে হইয়াছিল। বৃহস্পতির চারিটি বড় চাঁদ উহার লম্বা লেজটিকে ধরিয়া এমন টানাটানি আরম্ভ করিয়াছিল যে, তাহার লেজ ছিঁড়িয়া টুক্‌রা-