পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৮৪
গ্রহ-নক্ষত্র

 ১৮৫২ সালে তাহারা ঠিক সময়েই উদিত হইল, কিন্তু এবারে তাহাদের যমজ মূর্ত্তি দেখা গেল না। জ্যোতিষীরা হিসাব করিয়া দেখিলেন,—বায়েলার দুই খণ্ডের মধ্যে প্রায় দেড় লক্ষ মাইল তফাৎ হইয়াছে। ইহার পরে ১৮৫৭ সালে তাহাদের ফিরিবার কথা ছিল। বায়েলার আরো কি দুর্গতি হয় দেখিবার জন্য জ্যোতিষীরা উদ্বিগ্ন হইয়া বসিয়া ছিলেন; কিন্তু তাহার দেহের একটুক্‌রাকেও সে বৎসরে দেখা যায় নাই। সেই সময় হইতে বায়েলা একেবারে নিরুদ্দেশ।

 বায়েলার ধূমকেতুর এই রকম দুর্গতি জ্যোতিষের একটা মজার গল্প। ধূমকেতুদের লেজে বা মুণ্ডতে যে কোনো সার বস্তু নাই, এই ঘটনা হইতে বুঝা যায় না কি? বায়েলার মুণ্ডতে যদি একটুও জমাট বা ভারি জিনিস থাকিত তাহা হইলে সেটা কখনই সূর্য্য বা গ্রহদের টানে ঐ রকমে ভাঙিয়া-চুরিয়া ধূলা হইয়া যাইত না।

 ধূমকেতুদের অনেক কথাই তোমাদিগকে বলিলাম। কেন সূর্য্যের কাছে আসিলে তাহাদের লেজ বাহির হয় এবং দূরে গেলে লেজ ছোট হইয়া আসে, কেবল এই কথাটাই তোমাদিগকে বলা হয় নাই।

 এখানে ধূমকেতুর একটা ছবি দিলাম। ছবি দেখিলেই বুঝিবে ধূমকেতুর লেজটি সর্ব্বদাই সূর্য্যের উল্‌টা দিকে রহিয়াছে এবং সে যেমন সূর্য্যের কাছে আসিতেছে, অমনি লেজটা এক-একটু করিয়া বাড়িয়া চলিতেছে।

 লেজের এই রকম বাড়া-কমার কারণ জিজ্ঞাসা করিলে জ্যোতিষীরা বলেন, ধূমকেতুরা যখন সূর্য্য হইতে দূরে থাকে তখন তাহাদের দেহের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জড়পিণ্ডগুলির মধ্যে কোনো রকম চঞ্চলতা থাকে না। কিন্তু সূর্য্যের কাছে আসিলেই তাহার টানে সেগুলির মধ্যে চঞ্চলতা দেখা দেয়। তাহারা তখন দেহের ভিতরে থাকিয়া ছুটাছুটি করে এবং পরস্পরকে ধাক্কাধুক্কি মারিতে থাকে। কতকগুলি পরস্পরকে ঠোকাঠুকি দিতে থাকিলে কি হয়, তোমরা অবশ্যই দেখিয়াছ। একখানা পাথরকে