পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
উল্কাপিণ্ড
১৮৯

করিয়া ছুটিতে আরম্ভ করে। কিন্তু বাতাসের ঘসা পাইয়া এই সকল ঠাণ্ডা গোলা শেষে এমন গরম হইয়া উঠে যে, মাটিতে পড়িলে তাহাতে হাত দেওয়া যায় না। কামানের গোলা সেকেণ্ডে দুই মাইলের বেশি যাইতে পারে না, কিন্তু উল্কাপিণ্ডগুলি চলে সেকেণ্ডে কুড়ি মাইল করিয়া। তাহা হইলে তোমরা বোধ হয় বুঝিতে পারিতেছ, বাতাসের ঘর্ষণে পথের মাঝে উল্কাপিণ্ডগুলির পুড়িয়া ছাই হইয়া যাওয়া একটুও আশ্চর্য্য নয়।

 উল্কাপিণ্ড যে সত্যই পুড়িতে পুড়িতে নীচে নামে, তাহাদের পাড়ার সময়ে ভাল করিয়া দেখিলে তোমরা বুঝিতে পারিবে। যে পথে উল্কাপিণ্ড নামিয়া আসে অনেক সময়ে সেখানে এক রকম আলো দেখা যায়। উল্কা নিভিয়া গেলেও কিছুক্ষণ ঐ আলো আকাশের গায়ে থাকে। জ্যোতিষীরা বলেন, গরম হইয়া পুড়িতে আরম্ভ করিলেই উল্কার দেহ হইতে বাষ্প বাহির হয় ও তাহা জ্বলিতে থাকে। কিন্তু এই বাষ্পকে উল্কারা সঙ্গে করিয়া লইয়া যাইতে পারে না, তাহা পথের মাঝেই ছড়াইয়া থাকে। কাজেই উল্কাগুলি জ্বলিয়া-পুড়িয়া নিভিয়া গেলে ঐ জ্বলন্ত বাষ্প কিছুক্ষণ তাহাদের পথকে আলো করিয়া রাখে।

 এই সব কথা শুনিয়া বোধ হয় তোমরা মনে করিতেছ, সব উল্কাই বুঝি পুড়িয়া পথের মাঝেই ছাই হইয়া যায়। কিন্তু তাহা নয়। যেগুলি আকারে বড় তাহারা বাতাসের ঘসা পাইয়া নিঃশেষে পুড়িয়া যাইবার সময় পায় না,—তাহাদের আধ্‌পোড়া দেহ কখনো কখনো ভয়ানক বেগে মাটিতে আসিয়া পড়ে এবং মাটিতে পুঁতিয়া যায়। তখন মাটি খুঁড়িয়া সন্ধান না করিলে তাহাদিগকে পাওয়া যায় না।

 কলিকাতার যাদুঘরে অর্থাৎ মিউজিয়মে তোমরা যখন যাইবে তখন খোঁজ করিয়ো,—দেখিবে, ঐ-রকম আধ্‌পোড়া উল্কাপিণ্ড সেখানে অনেক সাজানো আছে। কোন্ সময়ে কোথায় সেগুলিকে পাওয়া