পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৯০
গ্রহ-নক্ষত্র

গিয়াছিল তাহাও লেখা আছে দেখিবে। এই পিণ্ডদের ওজন নিতান্ত অল্প নয়। এক ছটাক দু-ছটাক হইতে আরম্ভ করিয়া কোনো কোনো পিণ্ডের ওজন পঁচিশ ত্রিশ মণ পর্য্যন্ত হইতে দেখা গিয়াছে।

 কোনো জিনিসকে পোড়াইলে তাহা কোথায় যায় বলিতে পার কি? তোমরা হয় ত বলিবে তাহা নষ্ট হইয়া যায়। কিন্তু বৈজ্ঞানিকেরা বলেন, ইহারি উল্টা কথা। তাঁহাদের মতে এই ব্রহ্মাণ্ডের কোনো জিনিসেরই ক্ষয় নাই। তুমি যখন একখানি কাঠকে পোড়াইলে, তখন মনে হয় বুঝি কাঠখানি নষ্টই হইয়া গেল, কিন্তু তাহার অণু-পরমাণুর একটিও ক্ষয় পায় না। কাঠের কতক অংশ জল হইয়া আকাশে উড়িয়া যায়, নানা রকম গ্যাস হইয়া কতক বাতাসে মিশিয়া যায়, কতক ছাই হইয়া পড়িয়া থাকে। ঐ জলই জমা হইয়া হয় ত বৃষ্টির আকারে মাটিতে পড়ে এবং বাষ্পগুলিও নানা আকারে আমাদের কাছে ধরা দেয়।

 তাহা হইলে দেখ,—যে উল্কাপিণ্ডগুলি বাষ্প হইয়া আকাশে পুড়িয়া যায়, তাহাদের এক কণাও নষ্ট হয় না। দেহের সকল অংশই বাতাসে উড়িয়া বেড়ায় এবং কখনো কখনো জমাট বাঁধিয়া ধীরে ধীরে পৃথিবীর উপরে নামিয়া আসে। মেরুপ্রদেশের বরফের উপরে উঁচু পাহাড়ের মাথায় এবং সমুদ্রের তলায় খোঁজ করিয়া বৈজ্ঞানিকেরা উল্কার দেহের ছাই-ভস্ম অনেক দেখিতে পাইয়াছেন। আমাদের চারিদিকের বাতাসে সর্ব্বদাই যে ধূলির কণা ভাসিয়া বেড়ায়, তাহাতেও উল্কাদের ছাই দেখা গিয়াছে। প্রতিদিন হাজার হাজার উল্কা পৃথিবীর বাতাসে জ্বলিয়া পুড়িয়া ছাই হয়; সুতরাং এই সব ছাইয়ের কণায় যে আমাদের আকাশ সত্যই ভরা রহিয়াছে, তাহাতে আর সন্দেহ নাই। তোমার পড়িবার টেবিলের উপরে যে বই সাজানো আছে, দু’দিন না ঝাড়িলে তাহাতে কত ধূলা জমা হয় দেখ নাই কি? ইহার পনেরো