পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
উল্কাপিণ্ড
১৯৫

 তোমরা উপরের কথাগুলি বুঝিতে পারিলে কিনা জানি না। যদি না বুঝিয়া থাক, পূর্ব্ব পৃষ্ঠায় একটা ছবি দিলাম। ছবিটি দেখিলে বুঝিবে।

 ছবিতে ডিমের মত যে চওড়া রাস্তাটি রহিয়াছে, তাহা বায়েলার ভ্রমণ-পথ। বায়েলার ধূমকেতুর দেহ গুঁড়া হইয়া গিয়াছে, তাই রাস্তায় সেই গুঁড়া ছড়ানো আছে। তার পরে যে গোল পথটি দেখিতেছ, তাহা পৃথিবীর পথ। এখন দেখ,—যেখানে বায়েলার পথের সহিত পৃথিবীর পথ কাটাকাটি করিয়াছে, সেখানে ২৭শে নভেম্বর তারিখে পৃথিবী হাজির হইয়াছে। এই অবস্থায় যে সত্যই হাজার হাজার উল্কাপিণ্ড পৃথিবীর চারিদিকে থাকে, তোমরা ছবি দেখিলেই তাহা বুঝিবে। কিন্তু এ রকম ছোট ছোট শিকার কাছে পাইয়া পৃথিবী কোনোমতে চুপ করিয়া থাকিতে পারে না, ঐগুলিকে টানিয়া সে মাটিতে ফেলিতে আরম্ভ করে। তাহা হইলে বুঝিতে পারিতেছ, বায়েলার দেহের হাজার হাজার ক্ষুদ্র অংশ বাতাস ভেদ করিয়া মাটিতে পড়িবার সময়ে জ্বলিয়া-পুড়িয়া উল্কাবৃষ্টির উৎপত্তি করে।

 বায়েলার ধূমকেতুর সহিত উল্কাপাতের এই সম্বন্ধ জানা গেলে, জ্যোতিষীরা খুব উৎসাহিত হইয়াছিলেন এবং বৎসরের অন্য দিনে যে সকল উল্কাবৃষ্টি দেখা যায়, তাহাদেরও কারণ বাহির করিবার জন্য চেষ্টা করিয়াছিলেন। ইহাতে এখন আমরা জানিতে পারিয়াছি, বড় বড় উল্কাবৃষ্টির দিনে পৃথিবী এক একটা ধূমকেতুর রাস্তায় গিয়া হাজির হয়। তোমরা আগেই শুনিয়াছ, ধূমকেতুর দেহে পৃথিবীর মাটি-পাথরের মত জমাট জিনিস নাই, খুব ছোট উল্কাপিণ্ড লইয়াই তাহাদের দেহ। কাজেই যখন সূর্য্যকে ঘুরিবার জন্য ভয়ানক বেগে চলিতে আরম্ভ করে, তথন ইহারা নিজেদের লেজগুলিকে এবং হাড়গোড়-ভাঙা দেহকে গুছাইয়া লইয়া যাইতে পারে না। হয় ত লেজের খানিকটা বা মুণ্ডের