পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
উল্কাপিণ্ড
১৯৭

পড়িবে না, কারণ পৃথিবী তাহাকে টানিতেই পারিবে না। জ্যোতিষীরা হিসাব করিয়া বলেন, ঐ রকম গোলা চাঁদের মত পৃথিবীকে ঘুরিয়া বেড়াইতে থাকিবে,—অর্থাৎ সে যেন পৃথিবীর একটি নূতন চাঁদ হইয়া দাঁড়াইবে। কিন্তু এ রকম অবস্থায় তাহার বেশি দিন থাকা চলিবে না;—সূর্য্য তাহাকে বিলক্ষণ জোরে টান দিতে আরম্ভ করিবে। কাজেই তাহাকে তখন গ্রহদের মত সূর্য্যেরই চারিদিকে ঘুরিয়া বেড়াইতে হইবে।

 বলা বাহুল্য, আজ পর্য্যন্ত ঐ রকম অদ্ভুত কামান প্রস্তুত করিয়া কেহই গোলা ছুড়িতে পারে নাই। কারণ গোলার গতি সেকেণ্ডে সাত বা আট মাইল না হইলে তাহা কখনই পৃথিবী ছাড়িয়া পলাইতে পারে ন। আজকালকার খুব ভাল কামানের গোলা সেকেণ্ডে দুই মাইলের বেশি দৌড়িতে পারে না।

 এখনকার অবস্থা যাহা হউক না কেন, পৃথিবীতে এমন একটি সময় ছিল যখন সত্যই আট দশ মাইল বেগে মাটি-পাথর ও নানা আকরিক বস্তু আকাশের উপরে উঠিত এবং পৃথিবীর টানের সীমা পার হইয়া যাইত। তোমরা ইহা শুনিয়া বোধ হয় বিস্মিত হইতেছ, কিন্তু কথাটি একবারে অসম্ভব নয়। জ্যোতিষীরা বলেন, এখন পৃথিবীতে যেমন বিসুভিয়স্, এট্‌না প্রভৃতি কয়েকটি মাত্র আগ্নেয়গিরি আছে, অতি প্রাচীনকালের অবস্থা এরকম ছিল না। তখন পৃথিবী খুব গরম ছিল; এজন্য অসংখ্য আগ্নেয় পর্ব্বত মাটি, পাথর, লোহা, তামা প্রভৃতি জিনিস জোরে জোরে আকাশের উপর দিকে ছুড়িত। এই সব জিনিসের মধ্যে কতকগুলি পৃথিবীর আকর্ষণের সীমা পারও হইয়া যাইত। কাজেই তখন তাহারা পৃথিবীতে আর ফিরিতে পারিত না,—আমাদের সেই কামানের গোলার মত, ছোট গ্রহের আকারে সেগুলি সূর্য্যকে ঘুরিয়া বেড়াইত। জ্যোতিষীরা বলেন, ঐ-সব বড় বড় আগ্নেয়-পর্ব্বতের চিহ্ন এখন পৃথিবীতে না থাকিলেও, তাহারা যে মাটি-পাথর এবং