পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২১৬
গ্রহ-নক্ষত্র

লইতে হয়, মানুষের জন্মমৃত্যুর মত নক্ষত্রদেরও জন্ম-মৃত্যু তালে তালে এক সঙ্গে চলে।

 তোমরা হয় ত ভাবিতেছ, দূরবীণ খাটাইয়া বুঝি এখনি তোমাদিগকে নক্ষত্রদের জন্মমৃত্যু দেখাইব। কিন্তু তাহা পারিব না। মানুষ বাঁচে কত বৎসর জান ত,—সত্তর আশী নব্বুই না হয় একশত বৎসর পর্য্যন্ত। কিন্তু এমন কতকগুলি পোকা আছে, যাহারা দু’ ঘণ্টা তিন ঘণ্টা মাত্র বাঁচে। এই অল্প সময়ের মধ্যেই তাহারা জন্মিয়া বড় হয়, বুড়ো হয় এবং মরিয়া যায়। এখন যদি এই রকম একটি পোকার দল একটা পাড়া গাঁয়ে গিয়া কোমর বাঁধিয়া বলে, মানুষ কি রকমে জন্মে ও কি রকমে মরে দেখিতে হইবে, তাহা হইলে তাহারা কি সতাই মানুষের জন্মমৃত্যু দেখিতে পায়। পাড়া গাঁয়ে রোজ মানুষের জন্মমৃত্যু হয় না। কাজেই আস্ফালন করিয়া বসিতে বসিতেই এক ঘণ্টার মধ্যে পোকার দলের ভবলীলা সংবরণ করিতে হয়;—জন্মমৃত্যু দেখিবে কে? নক্ষত্রদের তুলনায় মানুষের পরমায়ু ঠিক পোকার দলের পরমায়ুরই সমান। নক্ষত্রেরা বাঁচে লক্ষ লক্ষ বৎসর, মানুষ বাঁচে এক শত বৎসর। কাজেই আমরা যদি এই একশো বৎসরের পরমায়ু হাতে করিয়া এখনি দূরবীণ খাটাইয়া নক্ষত্রদের জন্মমৃত্যু দেখিতে যাই, তাহা হইলে একটা হাসির ব্যাপার হয় না কি?

 অল্পায়ু পোকাদের সঙ্গে মানুষের তুলনা করিলাম, কিন্তু তাহাদের বুদ্ধি-বিবেচনা যে সত্যই পোকার মত নয়, একথা বোধ হয় তোমাদিগকে বুঝাইয়া দিতে হইবে না। মানুষের খুব উচ্চ বুদ্ধি ও জ্ঞান আছে। তা ছাড়া বর্ত্তমানকে দেখিয়া অতীত কালের কথা বেশ আন্দাজ করিতে পারে এবং ভবিষ্যতে কি হইবে তাহাও সব দিক্ দেখিয়া শুনিয়া ঠিক্ জানিতে পারে। জ্যোতিষীরা বর্ত্তমানের নানা ঘটনা দেখিয়া এই রকমেই নক্ষত্রদের জন্মবৃত্তান্ত লিখিয়াছেন।