পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৩০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমাদের জ্যোতিষ
২৪৯

তোমরা জান না। লোকে বলে, দক্ষ রাজার সাতাইশটি কন্যা ছিলেন, এবং তাঁহাদেরি নাম ছিল অশ্বিনী, ভরণী, কৃত্তিকা, রোহিণী, ইত্যাদি। দক্ষ রাজা সাতাইশ রাজকন্যার জন্য সাতাইশটি জামাইয়ের সন্ধান করিতে না পারিয়া, এক চাঁদের সঙ্গেই সাতাইশ কন্যার বিবাহ দিয়াছিলেন। তাঁহারাই এখন সাতাইশ নক্ষত্রের আকারে আকাশে ছড়াইয়া রহিয়াছেন। চাঁদ সাতাইশ দিনে ইঁহাদেরি এক একবার দেখা দিয়া ঘুরিয়া বেড়ায়।

 বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ় প্রভৃতি যে বারোটা মাসের নাম আছে, সেগুলি আমাদের পূর্ব্বপুরুষেরা কোথা হইতে পাইয়াছিলেন, তাহা বোধ হয় তোমরা জান না। এই সব নামের সঙ্গেও জ্যোতিষের কথা জড়ানো আছে। প্রতিমাসেই একবার অমাবস্যা এবং একবার পূর্ণিমা হয়, ইহা তোমরা জান। প্রত্যেক পূর্ণিমায় চাঁদ আকাশের কোন্ নক্ষত্র-মণ্ডলে থাকে, আমাদের পূর্ব্বপুরুষেরা ভাল করিয়া দেখিতেন এবং সেই নক্ষত্রের নামে মাসের নাম দিতেন। বৎসরের যে মাসটিকে আমরা বৈশাখ বলি, সেই সময়ে চাঁদ বিশাখা নক্ষত্রে আসিয়া পূর্ণিমা দেখাইত; তাই ঐ মাসের নাম বৈশাখ হইয়াছিল। ইহার পরের পূর্ণিমা জ্যেষ্ঠা নক্ষত্রে হইত, তাই বৈশাখের পরের মাসটির নাম জ্যৈষ্ঠ হইয়াছিল। এই রকমে আষাঢ়, ভাদ্র, আশ্বিন প্রভৃতি বাকি সব মাসেরই নামের সঙ্গে এক একটা নক্ষত্র-মণ্ডলের নাম জড়াইয়া ছিল। এখন অবশ্য বৈশাখের পূর্ণিমা বিশাখা নক্ষত্রে হয় না এবং জ্যৈষ্ঠের পূর্ণিমাও জ্যেষ্ঠা নক্ষত্রে হয় না; তথাপি আমরা আজও পূর্ব্বপুরুষদিগের দেওয়া নামগুলিকে লইয়া বৎসরের বারোটা মাসকে বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ আষাঢ় ইত্যাদি বলি।

 তাহা হইলে দেখ, আমাদের পূর্ব্বপুরুষেরা সময়-বিভাগ, নক্ষত্র-বিভাগ, ইত্যাদি যাহা কিছু করিতেন, তাহার মধ্যে একটুও মিথ্যা