পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৩০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমাদের জ্যোতিষ
২৫৩

 তোমরা বোধ হয় জান, আমাদের পূজাপার্ব্বণ ব্রতউপবাস শ্রাদ্ধশান্তি সকলি চান্দ্র-দিনের হিসাবে অর্থাৎ তিথি লইয়া স্থির করিতে হয়। কিন্তু প্রচলিত দিনের চেয়ে তিথির দিন ছোট। কাজেই ইংরাজদের বড়দিন ইত্যাদি উৎসব যেমন প্রতিবৎসরেরই এক একটা বাঁধা তারিখে হয়, আমাদের দুর্গাপূজা বা অপর পূজাপার্ব্বণ বৎসরের কোনো একটা বাঁধা তারিখে হইতে পারে না। প্রতি বৎসরেই পূজাপার্ব্বণের দিন আগেকার বৎসরের দিনের তুলনায় এগারো দিন করিয়া তফাৎ হইয়া পড়ে। কিন্তু এই তফাৎকে কখনই চারি পাঁচ বৎসর ধরিয়া জমিতে দেওয়া যায় না। জমিতে দিলে, আমাদের দুর্গাপূজা হয় ত পৌষ মাসে, দোলযাত্রা হয় ত আষাঢ় মাসে আসিয়া পড়ে। শরৎকালের শারদীয়পূজা এবং বসন্তের দোলযাত্রাকে কি শীতকালে ও বর্ষাকালে ফেলা কর্ত্তব্য? কখনই নয়। কাজেই প্রচলিত বৎসরের সহিত চান্দ্রবৎসরের তফাৎটাকে মাঝে মাঝে ঘুচাইয়া দেওয়া আবশ্যক।

 তাই আমাদের দেশের নিয়ম এই যে, চান্দ্র বৎসর এগারো দিন করিয়া বাড়িতে বাড়িতে যখন তিন বৎসরে তেত্রিশ দিন বেশি হইয়া পড়ে, তখন একটা চান্দ্র-মাসকে হিসাব হইতে একবারে বাদ দিতে হয়। কাজেই তেত্রিশ দিনের তফাতের পর হঠাৎ চান্দ্র-মাস ও প্রচলিত মাসের মধ্যে প্রায় মিল হইয়া পড়ে।

 এই রকমে বাদ-দেওয়া মাসকে কি বলে, তাহা বোধ হয় তোমরা জান না। ইহাকে মল-মাস বলে। এই মাসটিকে হিন্দুরা মাসের মধ্যেই ধরেন না। কোনো যাগ-যজ্ঞ পূজা-হোম বা শুভ কার্য্য এই মাসে করা হয় না।

 কেবল হিন্দুরাই যে এই রকমে চন্দ্রের গতি দেখিয়া বৎসর ঠিক করেন, তাহা নয়। মুসলমানেরাও ঠিক এই হিসাবে বৎসর ও মাস ভাগ করেন এবং তাঁহাদেরও পূজাপার্ব্বণ সেই হিসাবে চলে। কিন্তু