পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৪২
গ্রহ-নক্ষত্র

চাঁদ মাঝে দাঁড়াইয়া এত উজ্জ্বল সূর্য্যটাকে কি-রকম কালো করিয়া ফেলিয়াছে।

 এ-রকম পূর্ণ সূর্য্য-গ্রহণ প্রায়ই হয় না। আমার এত বয়স হইয়াছে, আমি একটাও দেখি নাই। প্রায় কুড়ি বৎসর পূর্ব্বে, আমরা যখন কলেজে পড়ি, তখন ভারতবর্ষে এই-রকম গ্রহণ একবার হইয়াছিল, তাহা আমরা পূর্ব্বেই বলিয়াছি। আমাদের বাঙ্‌লা দেশ হইতে পূর্ণ-গ্রহণ দেখা যায় নাই, কেবল বিহার-অঞ্চলে আরাজিলা-প্রভৃতি জায়গা হইতে সূর্য্যকে একেবারে ঢাকা পড়িতে দেখা গিয়াছিল। ইংলণ্ড, জার্ম্মানি, ফ্রান্স্, আমেরিকা, জাপান প্রভৃতি দেশ হইতে অনেক জ্যোতির্ব্বিৎ পণ্ডিত অনেক খরচ-পত্র করিয়া ভারতবর্ষে উপস্থিত হইয়াছিলেন। বড় বড় দূরবীণ খাটাইয়া ও নানা যন্ত্র দিয়া পূর্ণ-গ্রহণের সময়কার সূর্য্যের ফোটোগ্রাফ্ ছবি তুলিবার জন্য প্রতীক্ষা করিতেছিলেন। বর্ষাকালে এরকম গ্রহণ হইলে হয়ত তাঁহারা আসিতেন না, কারণ গ্রহণের সময়ে একখানা মেঘ উঠিয়া সূর্য্য ঢাকিয়া দিলে গ্রহণ দেখা হইত না। সব প্রস্তুত, যন্ত্র-পাতি থাটাইয়া জ্যোতির্ব্বিদ্‌গণ গ্রহণের জন্য প্রতীক্ষা করিয়া আছেন, হঠাৎ একখানা মেঘ উঠিয়া সূর্য্যকে ঢাকিয়া দিল, এরকম ঘটনা পূর্ব্বে আনেক ঘটিয়াছে। ইহাতে জ্যোতির্ব্বিদ্‌গণের মনে কত কষ্ট হয় ভাবিয়া দেখ। তোমরা কলিকাতার আলিপুরের চিড়িয়াখানায় বেড়াইতে যাইবে বলিয়া বসিয়া আছ, হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি আসিল, তোমাদের যাওয়া হইল না। ইহাতে মনে কত কষ্ট হয় বল দেখি। জ্যোতির্ব্বিদ্‌গণের এর চেয়েও কষ্ট হয়, কারণ কত সাত-সমুদ্র তের-নদী পার হইয়া, কত টাকা খরচ করিয়া, জাহাজে চড়িয়া তাঁহারা আসেন।

 গ্রহণের সময়ে দু’ মিনিটের জন্য সূর্য্য ঢাকা পড়িয়া গেল, চারিদিক অন্ধকার হইল, পাখীরা বাসায় যাইবার আয়োজন করিতে লাগিল,