পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সূর্য্যের বর্ণমণ্ডল
৪৫

সেই আগুন ঝড়ের মত উপর নীচে ছুটাছুটি করিয়া সূর্য্যকে কি ভয়ানক করিয়া রাখিয়াছে, ইহা হইতে তোমরা বুঝিতে পারিবে।

 ছবিতে যে মটরের মত সাদা বিন্দুটা রহিয়াছে, তাহা আমাদের পৃথিবী। বর্ণ-মণ্ডলের এক একটা শিখা পৃথিবীর তুলনায় কত বড় তাহা ভাবিয়া দেখ! যেন মহাপ্রলয়ের আগুন ঐ সকল শিখায় রহিয়াছে!

 বৈজ্ঞানিকদের ক্ষমতা অদ্ভুত! খুব দূরের নক্ষত্র হইতে যে একটু আলো আমাদের চোখে আসিয়া পড়ে, তাহা কোন্ কোন্ বাষ্প জ্বলিয়া জন্মিতেছে, এই ছোট পৃথিবীতে বসিয়া একটা খুব ছোট যন্ত্র দিয়া তাঁহারা স্থির করিতে পারেন। ইহা বড় কম ক্ষমতা নয়। মনে কর, তুমি খুব উঁচু এক পাহাড়ে চড়িয়া কতকগুলি বাষ্প মিশাইয়া আগুন করিতে লাগিলে, দশ মাইল বা বিশ মাইল দূরে বৈজ্ঞানিক-মহাশয় তাঁহার ঘরের বারান্দায় বসিয়া সেই আলো দেখিতে লাগিলেন। এখন তিনি যদি ইচ্ছা করেন, তাহা হইলে তাঁহার সেই যন্ত্র দিয়া বলিয়া দিতে পারেন, তুমি কোন্ কোন্ বাষ্প জ্বালিয়া আগুন করিয়াছ। দশ মাইল বিশ মাইল ত অতি সামান্য কথা, কোটি কোটি মাইল দূরে নক্ষত্রদের উপরকার আলো কি কি পুড়িয়া জন্মিতেছে, তাহাও ঐ-রকমে তাঁহারা বলিয়া দিতেছেন এবং সূর্য্যের আলোক-মণ্ডলে ও বর্ণমণ্ডলে কি কি জিনিস জ্বলিতেছে, তাহাও স্থির করিতেছেন। এই-রকমে সূর্য্যে আমাদের জানা-শুনা প্রায় কুড়িটি জিনিস আছে বুঝা গিয়াছে এবং তাহার সবগুলিই জ্বলিতেছে বলিয়া ঠিক হইয়া গিয়াছে। লোহা, সীসা, টিন আছেই এবং রৌপ্যও সম্ভবত আছে, কিন্তু ইহাদের সকলই বাষ্প হইয়া জ্বলিতেছে।

 সূর্য্যের বর্ণ-মণ্ডল হইতে যে সকল ভয়ানক লাল শিখা বাহির হয়, জ্যোতিষীরা পূর্ণ সূর্য্যগ্রহণের সময়ে তাহা যন্ত্র দিয়া পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছেন। ইহাতে জানা গিয়াছে, সেগুলি হাইড্রোজেন্ গ্যাস্ জ্বলিয়াই