পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৪৮
গ্রহ-নক্ষত্র

ঢাকিয়া কালো করিয়া দেয়, অমনি সূর্য্যের আকাশের এই ছটা-মণ্ডল দেখা যায়।[১]

 ছবি দেখিলে বুঝিবে যে, ইহা ছটার মতই সূর্য্য হইতে বাহির হইয়াছে, এইজন্যই জ্যোতিষীরা সূর্য্যের আকাশের এই অংশকে ছটা-মণ্ডল (Corona) বলেন। কিন্তু ইহার গভীরতা বর্ণ-মণ্ডলের মত দশ হাজার কি বিশ হাজার মাইল নয়। সূর্য্যের বাহিরে লক্ষ লক্ষ মাইল জুড়িয়া ইহার স্থান। ১৮৭৮ সালে একটা গ্রহণে সূর্য্য হইতে এক কোটি মাইল দূরে ছটা-মণ্ডল দেখা গিয়াছিল। মাঝে চাঁদে-ঢাকা কালো সূর্য্য, তার পরে সেই রঙিন্ বর্ণ-মণ্ডল এবং শেষে এই ছটামণ্ডল সূর্য্য গ্রহণের সময়ে একটা দেখিবার জিনিস। যাঁহারা দেখিয়াছেন, তাঁহারা মোহিত হইয়াছেন এবং ইহার বিবরণ লিখিয়া গিয়াছেন। আমরা দেখি নাই, কাজেই ছবি দেখিয়া ও বিবরণ শুনিয়া এখন আমাদিগকে সন্তুষ্ট থাকিতে হইবে।

 কি কি জিনিস জ্বলিয়া সূর্য্যের ছটামণ্ডল জন্মিয়াছে, তাহা জানা গিয়াছে। জ্যোতির্ব্বিৎ পণ্ডিতগণ সূর্য্য-গ্রহণের সেই দুই চারি মিনিট সময়ের মধ্যে পরীক্ষা করিয়া তাহা স্থির করিয়াছেন। আমাদের জানা-শুনা জিনিসের মধ্যে তাঁহারা উহাতে হাইড্রোজেনের বাষ্পই জ্বলিতে দেখিয়াছেন। ইহা ছাড়া আরো যে অনেক বাষ্প জ্বলে, জ্যোতিষীরা তাহা জানিতে পারিয়াছেন। কিন্তু সে-সব বাষ্প আমাদের পৃথিবীতে নাই, কাজেই তাঁহারা তাহাদের নামও বলিতে পারেন নাই। দেখ, আমাদের সূর্য্যটি কি জিনিস!

 এখন বোধ হয়, তোমরা বুঝিতে পারিতেছ, বড় বড় জ্যোতিষীরা

  1. গ্রহণের সময় ছাড়া অপর সময়ে সূর্য্যের বর্ণ-মণ্ডল পরীক্ষা করিবার এক উপায় আজকালকার জ্যোতিষীরা বাহির করিয়াছেন, কিন্তু ছটামণ্ডলকে পূর্ণ সূর্য্য-গ্রহণ ছাড়া আর কখনই চক্ষে দেখা যায় না।