পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬০
গ্রহ-নক্ষত্র

কিন্তু আকাশে থাকিয়া যত গ্রহ-নক্ষত্র রাত্রিতে আলো দেয়, তাহাদের সব চেয়ে চাঁদ ছোট। সূর্য্যের তুলনায় চাঁদ কত ছোট তোমাদিগকে আগে বলিয়াছি। কিন্তু চাঁদ আবার পৃথিবীর চেয়ে এত ছোট যে, বিধাতা পুরুষ যদি চাঁদ দিয়া এই পৃথিবীর মত আর একটা পৃথিবী গড়িতে ইচ্ছা করেন, তাহা হইলে পঞ্চাশটা চাঁদকে ভাঙিয়া কাদা না করিলে পৃথিবী গড়িতে পারিবেন না। তাহা হইলে ভাবিয়া দেখ, আমাদের পৃথিবীটাকে যদি ধরা যায় একটা বড় মার্ব্বেল কিম্বা একটা মাঝারি গোছের মাটির ভাঁটা, তাহা হইলে চাঁদ হইয়া দাঁড়ায় একটা ছোট মটরের মত।

 আর একটা হিসাবের কথা বলি। তোমরা ছোট বেলায় ছেলে-ভুলোনো গল্পে শুনিয়াছ, মাটির তলায় পাতালে, এক রাজার বাড়ী আছে; সেখানে এক রাজ-কন্যা আছেন, দৈত্য-দানব কত কি আছে। এ গল্পটা যদি তোমাদের মনে না থাকে, তোমাদের ঠাকুরমার কাছে জিজ্ঞাসা করিও। গল্পটা আমার একটুও মনে নাই, তা’ না হইলে এখনি তাহা তোমাদিগকে বলিতে আরম্ভ করিতাম। যাহা হউক মনে কর, তোমরা যেখানে বসিয়া বই পড়িতেছ, সেখানে একটা প্রকাণ্ড কূয়ো খুঁড়িয়া পৃথিবীর মাঝামাঝি জায়গায় যাইবার চেষ্টা করিতেছ। কত খুঁড়িলে গল্পের সেই পাতালপুরীতে পৌঁছানো যাইবে, আন্দাজ করিতে পার কি? পণ্ডিতেরা হিসাব করিয়া দেখিয়াছেন, তাহা হইলে কূয়োটাকে প্রায় চারি হাজার মাইল খুঁড়িতে হইবে। কলিকাতা হইতে পঞ্জাব প্রায় হাজার মাইল। কাজেই দেখ, কলিকাতা হইতে পঞ্জাব যত দূরে কূয়োটাকে তাহারি চারিগুণ গভীর করিতে হইবে।

 কিন্তু কেউ যদি চাঁদে গিয়া কূয়ো খুঁড়িতে আরম্ভ করে, তাহা হইলে এক হাজার মাইল খুঁড়িলেই চাঁদের ঠিক মাঝখানে গিয়া পৌঁছিবে। ইহাও বড় কম দূর নয়। কিন্তু তাহা হইলেও পৃথিবীর মাঝে পৌঁছিতে