বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৮
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।

মহাশয় যাহা উপার্জ্জন করিতেন তাহার সামান্য ভাবে জীবন যাত্রা নির্ব্বাহ করিয়া অধিকাংশ অতিথি সেবা ও অন্যান্য পরোপকারক কার্য্যে ব্যয় করিতেন। এইরূপ কার্য্যে ব্যয় করাতে তিনি স্ত্রীকে অলঙ্কার প্রদানে সক্ষম হইতেন না। একদিন উহার ব্রাহ্মণী কিছু গহনা চাহেন তাহাতে তিনি হাস্য করিয়া থলি হইতে কিছু টাকা বাহির করিয়া পাঁচনলী কণ্ঠ মালার বদলে এক পুটুলি টাকা তাঁহার কণ্ঠে এবং মলের পরিবর্ত্তে দুই পায়ে দুই পুঁটুলি টাকা বাধিয়া দিলেন এবং বলিলেন, গহনা পরা ঐশ্বর্য্য দেখাইবার জন্য বইত নহে। এইরূপ টাকার পুটুঁলি বাঁধিলে যথেষ্ট হইবে। মিছামিছি স্বর্ণকারকে বানি দিবার আবশ্যক কি? ইহাতে তাহার স্ত্রী এতদূর অপ্রতিভ হইয়াছিলেন যে আর কখন তিনি প্রাণান্তে গহনার কথা উত্থাপন করিতেন না। যাহাদিগের স্ত্রীরা গহনার জন্য তাঁহাদিগকে উত্যক্ত করেন তাঁহাদিগকে আমরা এই উপায় অবলম্বন করিতে পরামর্শ দিই। ইহা সত্য বটে যে আমাদিগের সহধর্ম্মিণীরা গহনার জন্য স্বামীর সৎকার্য্যে প্রতিবন্ধকতাচরণ করেন তথাপি তাঁহারা এ বিষয়ে বিলাতের সীমস্তিনীগণ অপেক্ষা অনেক ভাল। শেষোক্ত সীমন্তিনীগণ রাশীকৃত টাকা বস্ত্রে ব্যয় করিয়া স্বামীকে ফতুর করেন, কিন্তু সে বস্ত্র পরে কোন কাজে আসিবে না কিন্তু আমাদিগের স্ত্রীদিগের স্বর্ণালঙ্কার দুঃখ বিপদের সময় অনেক কাজে আইসে।