বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রাম্য উপাখ্যান।
১১১

১৭ বৎসর পরে রাজমহলে পুনরায় একবার যাই। তখন গিয়া দেখি মজুরেরা অতি কষ্টে নবাবদিগের অট্টালিকা সকল ভাঙ্গিতেছে। সেকালে অট্টালিকা সকল খুব মজবুত ছিল, এক্ষণকার অট্টালিকা সকল আদৌ সেরূপ মজবুত নহে। ইংরাজনির্ম্মিত অট্টালিকা সকলে শীঘ্র ফাট ধরে। রাজমহলের উল্লিখিত ভগ্নাবশেষ দর্শন করিয়া আমরা ষ্টীমারে আরোহণ পূর্ব্বক রাজমহলের পর্বতের দিকে গঙ্গা নদীর যে খাড়ী গিয়াছে সেই খাড়ীর ভিতর দিয়া কিয়দ্দুর গমন করিয়া উক্ত পাহাড় সকল পর্য্যবেক্ষণ করি ও পাহাড়িয়াদিগের বন্য শ্রবণ ও বন্য নৃত্য দর্শন করি।

 তৎপরে রাজমহল হইতে মহানন্দা–পদ্মা নদীদ্বয়ের সঙ্গমস্থলাভিমুখে গমন করি। এই পথে জলদস্যুর ভয় থাকাতে আমরা রাত্রিতে ষ্টীমারের ডেকের উপর ভাল করিয়া পাহারা দিতাম। আমি মাথায় পাগড়ী বাঁধিয়া তলওয়ার হাতে করিয়া পাহারা দিতাম। যখন আমরা মহানন্দার ভিতর প্রবেশ করিলাম, তখন তাহার পুষ্করিণীর জলের ন্যায় আকাশবর্ণ জল ও তীরস্থ শ্যামল বন উপবন দর্শন করিয়া মনে মহানন্দ উপস্থিত হইল। যখন মহানন্দা নদীর ভিতর ষ্টীমার অগ্রসর হইতে লাগিল তখন গ্রাম্য লোকেরা “ধোঁয়া কলের লা এয়েছে রে” “ধোঁয়া কলের লা এয়েছেরে” বালিয়া তীরে আসিয়া বাষ্পীয়পোত দর্শন