পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>89 গ্রীক '9 হিন্দু। ধৰ্ম্মবিদ্যাও অবশু সেই মানবমুখে যে উৎপন্ন তাহতে সন্দেহ নাই ; কিন্তু সে পক্ষে নিজ হিন্দু সাধারণের যে বিশ্বাস তাহ স্বতন্থ। তাহাদের বিশ্বাসে তাহদের ধর্শ্ববিদ্যার প্রধান অংশ যাহা, তাহা ঈশ্বরদিষ্ট ও ঐশ্বরিক উপায়ে উৎপন্ন ; কেবল তদিতর অংশমাত্র মানবমুখনিঃস্থত, কিন্তু সেও যেমন তেমন মানুষ নহে—দেববং বা দেবাপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ। ফলতঃ হিন্দুর এবংবিধ বিশ্বাস নিতান্ত যে অমূলক তাহা নহে ; যেহেতু হিন্দু ধর্শ্ববিদ্যার প্রণেতা যাহারা, তাহারা প্রকৃতই ঈশ্বরের সহ একতানতাসম্পন্ন দিব্যপ্রকৃতি ঋষি এবং ঋষিকল্প কবি সকল । হিন্দুদিগের ধৰ্ম্মগ্রন্থ যেমন অসংখ্য, তেমনি সকল বিষয়ই গ্রন্থবদ্ধ থাকায়, অনুষ্ঠানকারিগণ আপন মনের সাহায্যে বা স্বায় ইচ্ছামত কিছুই করিতে পাইত না ; সুতরাং অনুষ্ঠানপৰ্ব্বে গ্রীকদিগের ন্যায় অস্থিরতা কোথাও ছিল না এবং সেই জন্ত, অনুষ্ঠানকারীদের অনুষ্ঠানহেতু গ্ৰীকধৰ্ম্মবিস্তায় যেমন অনেক নূতন বিষয় প্রবেশ করিতে ও সঞ্চিত হইতে পাইয়াছিল, হিন্দুধৰ্ম্মবিদ্যায় তাহ পায় নাই। পুনশ্চ হিন্দুর অপৌরুষেয় গ্রন্থ ও গ্রন্থোক্ত বিষয়সকল যদিও ভিন্ন ভিন্ন ঋষির নামে কথিত বটে, কিন্তু হিন্দুর বিশ্বাসে সে সকল ঋষি প্রকৃত এ সংগ্রহগ্রন্থ এখন লোপ হইয়া গিয়াছে । যাহা হউক, এই সকল গ্রস্থেত্তি কোন বিষয়ই, কোন গ্রীকের পক্ষে অবখপালনীয় বোধে সৰ্ব্বদা পালনীয় ছিল না ; কোন গ্রন্থেরই অবখ্যপাল্য শক্তি ছিল না। প্রতি রাজ্যের রাজসমিতি, ষে যে গ্রন্থের যে অংশ, যে যে দেবতা ও যে যে অনুষ্ঠান অবগুপালনীব বলিয়া স্থির করিত ; তাঁহাই কেবল সেই রাজ্যস্থ লোকদিগের পক্ষে অবখ্যপালনীয় হইত। অতএব ধর্মগ্রন্থাদির যে অবস্থাপাল্যশক্তি, তাহা রাজসমিতির তামুজ্ঞার উপর নির্ভর করিত –কি গুঢ় ধৰ্ম্মভাবের পরিচয় ! পুনশ্চ, হিন্দুর বেদপুরাণাদির পার্থে, এই সকল গ্ৰীক ধৰ্মগ্রন্থের উল্লেখ করিতে লজ্জাই বোধ হয় । বেদ উপনিষদাদির তুলনায় সামান্ত কাব্যনাটকের ষে অন্তরত, হিনূর ধৰ্ম্মগ্রস্তের নিকট গ্রীক ধৰ্ম্মগ্রন্থের অন্তরতা তদপেক্ষা কম কোথায় ?