পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

obb o গ্রীক ও হিন্দু। ফলতঃ মানবীয় মনের অবস্থা ও ভাবাবেশের প্রকার ও প্রকরণ অনুসারেই, প্রয়োগ অপ্রয়োগে প্রকারভেদ এবং দেবচরিতে ইতরবিশেষত্ব, বহুত্ব ও বৈচিত্র্য আদির উপস্থিতি হয়। এখন অবশু বুঝিতে পরিবে যে, কেন হিন্দু এবং গ্রীকের দেবতত্ত্ব তুলনস্থলে বিসদৃশ ভাব দৃষ্ট হয়। দুই সম অবস্থা ও সম পৰ্য্যায়ের হইলেই সুন্দর তুলনা হইতে পারে। কিন্তু এখানে দেখা যাইতেছে যে, গ্রীকের দেবতত্ত্ব আদি পৰ্য্যায়ের, আর হিন্দুর পর্য্যায় তদুত্তরতর। মক্ষমূলর প্রভৃতি, ইউরোপীয় ; হিন্দুর তাত্ত্বিক ও আধ্যাত্মিক দেবতত্ত্বে সুতরাং প্রবেশ করা তাহদের পক্ষে সহজ নহে। তাই আকুল হইয়া স্থির করিতে পারে নাই যে,হিন্দুকে বহুদেব-উপাসক বলা যাইবে, কি একেশ্বরবাদী বলা যাইবে ; অথবা দেবতার মধ্যে ইহাদের নিকৃষ্ট বা কে আর উৎকৃষ্টই বা কে । আমারও সেই সঙ্গে সঙ্গে জিজ্ঞাস! করি, প্রাচীন হিন্দুরা কিরূপ একেশ্বরবাদী ছিলেন ? তাহদের সে "একমেবাদ্বিতীয়ম বলিতে র্তাহারা কি বুঝিতেন ? ইন্দ্র, অগ্নি, বায়ু ইত্যাদি, এ সকল কি একমাত্র পরমেশ্বরের বহুধাব্যাপ্ত বিভূতির কেবল অলীক ভাবকল্পনা ; অথবা ইহাদিগেরও প্রত্যেকের পৃথক্ দেবতারূপ পৃথক্ সত্তায় বিশ্বাস করিতেন ? দেখা যাউক । পরমাত্মাই অনন্বিতভাবে ব্ৰহ্মশব্দে আখ্যাত হইয়াছেন ; ক্রিয়ান্বয়ে র্তাহাতেই পুনঃ পরমেশ্বরত্ব। পরমেশ্বর স্বীয় বৈষ্ণবী শক্তিযোগে এই বিশ্বমধ্যে আত্মপ্রকটত করিয়া থাকেন। শক্তি এবং শক্তিধরে দুই পৃথক্ সত্তা নহে ; সুতরাং যেখানে শক্তির বিকাশ, সেইখানে ঐশ্বরিকসত্তারও বিদ্যমানত । শক্তির পরিচয় কৰ্ম্মে এবং কৰ্ম্মই পদার্থপদ বাচ্য । অতএব ঐশ্বরিকসত্তাও, সৰ্ব্বপদার্থে দ্যোতনশীলতায় বিদ্যমান বুহিয়াছে ; ফলতঃ তাহা ভিন্ন কোন পদার্থেরই অস্তিত্ব সম্ভব হইতে