পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় প্রস্তাব । فت ان يت লিখনপ্রণালীর ব্যবহার দেখিতে পান নাই । (৬০) সে যাহা হউক, পুনশ্চঃ— “ভারতীয়েরা পরম সুখে বাস করিয়া থাকে ; স্বভাবে পরিমিতজীবী, এবং ব্যবহারে আড়ম্বরশ্বন্ত ও স্বরুচিসম্পন্ন। কেবল যজ্ঞাদির সময় ভিন্ন কখনও মুরাপান করে না।” যজ্ঞের সময় সুরাপান, বোধ (৬) মিগাস্থিনিস যে স্থানে লিথনপ্রণালীর অভাবের কথা বলিতেছে, সে স্থানের অর্থ স্পষ্ট নহে। উহ। সমস্ত হিন্দুজাতি সম্বন্ধে বলিতেছে, কি কেবল চন্দ্রগুপ্তের শিবিরস্থ লোকদিগের সম্বন্ধে বলিতেছে, তাহা ঠিক নিরূপণ কর। যায় না । তখন ভারতের উচ্চ গৌরব ও উচ্চ সভ্যতার সময়, অতএব তখন যে লিখনপ্রণালীর অস্তিত্ব ছিল না, এ কথা সমগ্র জাতি সম্বন্ধে প্রয়োগ করা fনতাস্ত আশ্চয্যের বিষয় এবং প্রয়োগকারী যে নিতান্তু অনভিজ্ঞ, তাহারই পরিচায়ক । কিন্তু যত দুর দেখা যাইতেছে, তাহাতে মিগাস্থিনিস্কে ততদূর অনভিজ্ঞ দশক বলিয়া ও বলা যাইতে পারে না । অতএব অনুমান হয়, ঐ কথা কেবল চন্দ্রগুপ্তের শিবিরস্থ লোকদিগের সম্বন্ধে প্রযুক্ত হইয়াছে ; এবং তথনকার কালে যুদ্ধাথে নিযুক্ত নীচজাতীয় সৈনিকের পক্ষে নিরক্ষর হওয়াও কিছু অসম্ভব নহে । অধুনাতন কালে মক্ষমুলারাদি ইউরোপীয় পণ্ডিতেরা বিবেচনা করিয়া থাকে ষে, প্ৰtচীন ভারতে, এমন কি পাণিনির মেয়ে পৰ্য্যস্ত, লিখনপ্রণালী প্রচলিত হয় নাই ; পর্ণবতপ্রমাণ সমস্ত গ্ৰন্থরাশি কেবল স্মৃতিশক্তির সাহায্যে রচিত, অধীত ও রক্ষিত হইয়া অসিয়াছে । যাহার সাধারণ স্মৃতির এরূপ আসস্তব ও অলৌকিক শক্তিতে স্বচ্ছন্দে বিশ্বাস করিতে পারে, অথচ অতি সস্তব ও সামান্ত কথা লিখনপ্রণালীর অস্তিত্বতে বিশ্বাস করিতে পারে না ; যাহারা পুনঃ, সেই পর্বতপ্রমাণ গ্রন্থরাশিস্থ অপার শব্দসমুদ্র বিলোড়িত, মৰ্থিত ও বিশ্লেষিত করিয়া কেবল বর্ণমালার বর্ণ সকলের মরপেচ ও কাটাকাটিতে পাণিনির যে অস্তুত ও অসাধারণ ব্যাকরণ, তাহাও একমাত্র স্মৃতিশক্তির মোগে উৎপন্ন বলিয়া বিশ্বাস করিতে পারে ; তাহদের বুদ্ধি ও বিবেচনা উভয়েরই ধন্যবাদ করিতে হয়। সেরুপ বিকৃত-বুদ্ধি ও বিবেচনাহীন লোকের সঙ্গে তক ও বিচারে প্রবিষ্ট হওয়ার কোনই প্রয়োজন দেখা যায় না । অথল। তাঙ্গাদের উল্লেখ পৰ্য্যস্ত ও কেবল সময়ের অপব্যয়মাত্র। তবে একটা কথা এই যে, কেবল টটানটি সংস্কৃত জ্ঞানকে মাত্র অবলম্বন করিয়া যাহারা স্বচ্ছন্দে এরূপ আশ্চৰ্য্য মত সকল প্রকাশে সাহসী হয় ; তাহীদের সেই সাহসটা দেখিবার ও লক্ষ্য করিবার বিষয় বটে !