পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রীক ও হিন্দু। প্রদর্শন করা হয়। ভারত-সন্তান তেমন কাৰ্য্যে কখনই সাহসী হইতে পারে না। সুতরাং শূদ্রেরা সহস্ৰগুণে নীচ হইলেও তাহারা মানবীয় অধিকার হইতে চু্যত হইতে পারে না। এজন্য শূদ্রের দাস্তবৃত্তি-অবলম্বী হইলেও, তাহtয়া সামাজিক স্বাধীনতা হইতে কোন অংশে বঞ্চিত নহে ; এবং সাধারণ রাজদ্বার ভিন্ন, কি আপন প্রভু, কি অপর কেহ, কাহারই নিকট তাহাদিগকে আপন সদসদের জবাবদিহি হইতে হইত না । পুনশ্চ, এই শূদ্রের দাসত্বস্বত্রে হীনতা প্রাপ্ত হওয়া দূরে থাকুক, বরং পূৰ্ব্ব পশুভাব হইতে মূক্ত হইয়া, মহুষ্যভাবই প্রাপ্ত হইছিল। কিন্তু এদিকে পিলাসগীদিগের অবস্থার প্রতি একবার অবলোকন করিয়া দেখ । দেখিতে পাইবে যে, মানুষ হইয়া, মনুষ্যত্ব পরিত্যাগপূৰ্ব্বক, মানুষকে কতদূর পশুভাবে ব্যবহার করিতে পারে। এই পিলাসগীদাসেরা গো মেষাদি পশুপালের সঙ্গে সমজাতীয় অবস্থার সম্পত্তিবিশেষ ছিল। সমাজের সঙ্গে গো মেষাদি পশুপালের যে সম্বন্ধ, ইহাদিগেরও সেই সম্বন্ধ । সুতরাং সামাজিক স্বাধীনতায় ইহার একেবারে বঞ্চিত। প্রভূই সৰ্ব্বেসৰ্ব্ব, রাখিলে রাখিতে পারে, মারিলে মারিতে পারে। প্রভুরাও ইহাদের উপর ততোধিক অত্যাচার করিত এবং যখন ইচ্ছা যাহার প্রাণদণ্ড বা প্রাণরক্ষা দ্বারা আপনার রোষ বা তুষ্ট ভাবের জ্ঞাপন করিত। সময়ে সময়ে এই হতভাগ্যদিগকে অরণ্যচর পশুর ন্যায় পালে পালে এককালে নিপাত করিবার পক্ষেও উদাহরণ বিরল নহে। এখানে দেখ, ইহলৌকিক ঐশ্বৰ্য্যপ্রিয়তাবশে নিজ স্বার্থসাধন হেতু, মনুষ্যচিত্ত কিরূপ মনুষ্যত্ব পরিত্যাগে প্রস্তুত হইয়াছিল। পিলাসগীরা ইহাদের দান্ত, কৃষি, পশুপালরক্ষা, ইত্যাদি যাবতীয় শ্রমসাধ্য এবং সামাজিক বোধে হেয় কাৰ্য্য নিৰ্ব্বাহ করিত।