পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ প্রস্তাব । 3○○ কিন্তু অন্তশ্চক্র তদ্বিপরীত স্বভাবহেতু বহুভাবে বিভাজিত হইল ; এজন্ত, বহিশচক্র হইতে একতা ও অন্তশ্চক্র হইতে বৈচিত্র্য বোধের উদয় হইয়া থাকে। চক্রদ্বয়, অথবা চক্রদ্বয় ছাড়িয়া দিয়া এখন আত্মা বলিয়াই বলা যাউক—আত্মার এরূপ গঠন ও স্বভাব হেতু, যখন কোন পদার্থ আত্মার সংলগ্নতায় আইসে, তখন আগে অন্তশ্চক্র সহিত সংস্পৰ্শহেতু ইন্দ্রিয়-বিষয়ৰূপ স্থল জ্ঞান, পরে সেই স্থল জ্ঞানের দ্বার দিয়া বহিশচক্র সংস্পর্শে পদার্থনিহিত সত্ত্ব জ্ঞানের অনুভূতি হয় । ঐ সত্ত্বজ্ঞান বহিশচক্রে মিলিত হইয়াও যদি বিধ্বস্ত না হইয়া অটল থাকিতে পারে, তাহা হইলে জানা গেল যে, পদার্থটি সৎ আদর্শে নিৰ্ম্মিত ; নতুবা অসৎ উহার আদর্শ, সুতরাং পদার্থটি ছন্নপদার্থ এবং তন্নিহিত সত্ত্বজ্ঞানও ভ্ৰমাত্মক। অতএব অন্তশ্চক্র দ্বারা পদার্থের ইন্দ্ৰিয়-বিষয়ত জ্ঞান ও বহিশচক্র দ্বারা পদার্থগত সত্ত্বাংশের সদসৎ(১৩) পরিমাণ হয় ; অথবা বহিশচক্র প্রমাণিত যে জ্ঞান, তাহাই সত্য ও সৎ স্বরূপ ; আর অন্তশ্চক্র হইতে যে জ্ঞান তাহা অসত্য, ভ্রমসফুল ও ক্ষণস্থায়ী। এই বহিশচক্রজাত যে সত্য ও সৎস্বরূপ জ্ঞান, তাহাই প্লেটোর সুবিখ্যাত আইডিয়া। এই আইডিয়ার বিষয় পূৰ্ব্বে উল্লেখ করিয়াছি এবং এখনও ইহার বিষয় কিছু বলিতে বাকী রহিল। প্লেটো একবার বলিয়াছেন, আত্মা অস্থষ্ট ও অনন্ত পদার্থ। কিন্তু এখানে আবার দেখা গেল যে, কেবল অম্বষ্ট বলিয়াই ক্ষান্ত নহেন ; অধিকন্তু আত্মা স্থষ্টি করার প্রকরণটা সেই স্বাক্টর মালমসলা এবং মালমসলার ভাগযোগ পর্য্যস্ত বিবৃত করিয়া যাইলেন। এ বিষম (১৩) এখানে বলিয়া দেওয়া উচিত যে, আমাদের বেদান্ত শাস্ত্রে সৎ ও অসৎ যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে, এখানে মূলভাগেও সৎ ও অসৎ শব্দ প্রায় সেইরূপ অর্থে ব্যবহার করা যাইতেছে ।