পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ প্রস্তাব । ২৬৫ মধ্যে কি যোগ কি বিয়োগ এ উভয় স্থলেই, মূল পদার্থের ধবংস ৰা জন্মাদি কিছুমাত্র হইতেছে না ; হইতেছে কেবল তাঁহাদের রূপেরই উদয়, বিলয় ও স্থিতি বিষয়ে ক্ষণিক পরিবর্তনমাত্র। এখন একবার অন্ত সমস্ত ভাব মন হইতে পরিত্যাগ করিয়া, একায়ত্তক এক সমগ্র দৃষ্টিতে অবলোকন করিয়া দেখ, সমষ্টিরূপ এই সমগ্র স্বষ্টি এক এবং অদ্বৈতমূৰ্ত্তি কি না। কিন্তু এ অদ্বৈতমূৰ্ত্তির মধ্যে, ব্যষ্টিরূপা পৃথক পদার্থ সকলের কি তা বলিয়া লোপ বা বিলয় দৃষ্ট হয় ? তাহ হয় না । ফলতঃ ব্যষ্টিরূপ সকল সমষ্টিমধ্যে তত্ত্বতঃ পৃথকত্ব পরিত্যাগে একস্বরূপতায় সমাবিষ্ট হইলেও, ব্যষ্টিরূপে পার্থক্য তাহাঁদের যাহা কিছু, তাহা তদ্বারা লোপ না হইয়া তখনও অভ্যন্তরভাগে অক্ষুন্ন রহিয়া যায়। এখন দেখ, অধিভৌতিক মুৰ্ত্তিমাত্রে, আধ্যাত্মিক কল্পনা-মূৰ্ত্তির বাহপ্রচার স্বরূপ। প্লেটো যে কল্পনামূৰ্ত্তিকে ঈশ্বরের মনঃস্থিত অাদর্শ বলিয়াছেন, হিন্দুতত্ত্ববিৎ তাহাকেই জীবসকলের কামনা বলিয়া ঘোষিত করিয়াছেন। প্রতিজীবের পৃথক কামনা ফলে পৃথক পদার্থত্ব এবং সমষ্টি জীবের সমষ্টি কামনা ফলে এক এবং অদ্বৈত পদার্থত্ব, সমষ্টিকামনার এইরূপ ফল ও পরিণাম হেতু, পুরাণে বিধাতার মানস-স্থষ্টি বলিয়া বর্ণিত হয়। আধিভৌতিক মূৰ্ত্তি আধ্যাত্মিক কল্পনামূৰ্ত্তির বাহ প্রচার হেতু, এই আধিভৌতিক স্বষ্টি দৃষ্টে আধ্যাত্মিক সংসারের ভাবও অবশ্য অনেকটা আমরা উপলব্ধি করিতে যে পারি, এ কথা নিতান্ত অসঙ্গত নহে। অতএব আধ্যাত্মিক সংসারে ব্যষ্টিভাবাত্মক কামনাবান প্রতিজীবস্থ পৃথক আত্মা, দেবতাত্মা সকল এবং অপরাপর অবস্থা ও গুণ প্রাপ্ত তাবৎ আত্মা, এই সমস্ত লইয়া সমষ্টিরূপ এবং এই সমষ্টি আত্মভাবকেই ভাবভেদে ঈশ্বর বা পরমাত্মা বা ব্ৰহ্ম বা পুরুষ শব্দে কহ যায়। কামনা এবং কামনার জন্য পদার্থত্ব প্রকটন প্রকৃতির কার্য্য এবং সেই