পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ প্রস্তাব । ২৬৯ আছে বটে, কিন্তু জলে প্রতিবিম্ব দৃষ্টে তাহার এই ভ্রম জন্মিয়াছে – আকাশস্থ আমি, বা এ নক্ষত্ররাজি একতর নহি, ঐ জলে যে প্রতিবিম্ব উহাই আমি । এই ভ্রমহেতু প্রথমে, আকাশস্থ নক্ষত্ররাজি হইতে নিজের ভেদজ্ঞান ; দ্বিতীয়তঃ স্বীয় আকাশস্থ অবস্থার জ্ঞানলোপ ; তৃতীয়তঃ, প্রতিবিম্বে আমিত্ব জ্ঞান জন্ত, জলের আন্দোলন আলোড়ন আদি নানা ভাবহেতু প্রতিবিম্বটি যে সকল অবস্থান্তর প্রাপ্ত হইতেছে, নক্ষত্রটি সেই সকল অবস্থান্তর নিজেতে আরোপ করিয়া, অবস্থা সকলের পরিণামভাগী হইতেছে । এই সকল অবস্থা ও পরিণাম ভোগ হইতে থাকিলেও, নক্ষত্রটি বস্তুতঃ তখন আছে কোথায় ?— তখনও সেই পূৰ্ব্ববৎ প্রতিবিম্ব ও প্রতিবিম্বের অবস্থা সকল হইতে । নির্লিপ্তভাৰুে আকাশে। প্রতিবিশ্বের অবস্থা সকল, এক অপরের কাৰ্য্য-কারণ আকারে, উত্তরোত্তর যতই অবস্থান্তর প্রাপ্ত হউক না কেন, নক্ষত্রটি তখনও নির্লিপ্ত ভাবে সেই আকাশেই থাকে। তবে ভ্রমের অবশ্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি ভিন্ন কমি নাই বটে এবং সেই বৃদ্ধ ভ্রম হেতু, অবস্থা সকলের কার্য্য-কারণতায়, কারণে কামনা ও কার্য্যে কামনা-পরিণামের অধ্যাস হয় । জীবের জীবত্বও ঠিক ঐরুপ , মায়াজালে সমষ্টিচু্যত নিজ প্রতিবিম্ব দর্শনে ভেদজ্ঞানের উদয় ও ঐ প্রতিবিশ্বে অমিত্ব বোধ হয় এবং তদ্ভুত্তরে নক্ষত্রের ন্যায়, প্রতিবিম্বের অবস্থায় অবস্থান্বিত হইয়া থাকে। আবার যখন, এই ভ্রম দূর হইয়া আকাশস্থ নক্ষত্ররাজি সহ অবস্থায় অভেদত্ব অনুভব হইবে, তখনই জীবের মোক্ষপ্রাপ্তি। অবস্থা হইতে অবস্থান্তর উৎপাদনে অবস্থা সকলের কার্য্যকারণতীয়, কারণে কামনা ও কাৰ্য্যে পরিণামের অধ্যাস হয় বলিয়াই ; গীতার একস্থানে এরূপ উক্ত যে, প্রকৃতিই আপন গুণানুসারে কৰ্ম্ম করিয়া যায়, কিন্তু অহঙ্কারবিমুঢ়াত্মা যে, সে তাহাতে