পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԵ8 গ্রীক ও হিন্দু । হিন্দুর তত্ত্ববিদ্যা ইহার বিপরীত। গ্রীকতত্ত্ব যেমন পার্থিব স্বচ্ছলতার মোহে উচ্চ লোকের সহ বহুপরিমাণে ঘনিষ্ঠত হারাইয়া, লৌকিক ও সামাজিক বিষয় লইয়া আকুলত প্রাপ্ত হইয়াছিল ; হিন্দুতত্ত্ব তেমনি, তদ্বিপরীতে অদৃষ্টশক্তির প্রতি ভীতিহেতু, লোকাতীত বিষয় লইয়া আকুলত প্রাপ্ত হইয়াছে। হিন্দুতত্ত্বের উদেশ্ব এবং বিষয় যদিও অনেকটা একঘেয়েপণায় পরিপূর্ণ, তথাপি উহার তত্ত্বাবর্তে প্রবেশ করিলে, জনে জনে ও প্রস্থানভেদে, কতই বিচিত্র বিষয় দেখিতে পাওয়া যায়। যথায় রামানুজস্বামী নিরূপণ করিতেছেন যে, পদার্থ তিন প্রকার, চিৎ, অচিৎ ও ঈশ্বর ; সুতরাং দ্বৈততত্ত্ব এবং স্রষ্টা-স্বই জ্ঞানের বিদ্যমানতা । শঙ্করাচার্য্য তথায় বেদান্তভাষ্যে প্রতিপন্ন করিয়া দিতেছেন যে, এই বিশ্ব অদ্বৈত, মহাবাক্য তত্ত্বমসি । উহার তত্ত্ব এবং পরিণাম,—“আমিই শিব,” “আমিই শিব।” প্রত্যভিজ্ঞা দর্শনও সেই সঙ্গে দেখাইতেছেন যে, “স একেশ্বরোহহম্।।” কণাদের মতে, জীবাত্মার গুণ, বুদ্ধি, সুখ, দুঃখ, ইচ্ছা, যত্ন, দ্বেষ, চিন্তা, ধৰ্ম্ম ও অধৰ্ম্ম এই কয়টি বিষয় আছে এবং পরমাত্মাতেও ঠিক তাই, প্রভেদ কেবল পরমাত্মায় মুখ, দুঃখ, দ্বেষ,চিন্তা, ধৰ্ম্ম ও অধৰ্ম্ম এই কয়টি নাই। ইহার মতে, জীবাত্মা ও পরমাত্মা স্বতন্ত্র । সাঙ্খ্যকে দ্বৈতবাদী বলে, কিন্তু তাহ জীবাত্মা ও পরমাত্মার পৃথকত্ব দর্শাইয়া নহে, পুরুষ ও প্রধানের স্বাতন্ত্র্য ও সমসাময়িকতা ও সমস্থায়িত্ব লইয়া । সাজ্য পরমাত্মা বা পরমেশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করে না, এই জন্য সাঙ্খ্যকে নিরীশ্বর দর্শন বলিয়া থাকে। সাজ্যের মতে পুরুষ ও প্রধান, এই দুই নিত্য বস্তু এবং ইহাদের সংযোগে স্থষ্টি । পুরুষ এক নহে, বহু অথবা অনন্ত । কিন্তু পুরুষ নিক্রিয় ও নিগুণ, কেবল প্রধানই গুণ ও ক্রিয়াশীল । প্রধান বা প্রকৃতি, পুরুষে উপগত হইলে, জীব ও জড় স্থষ্টির উদয় হইয়।