পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ প্রস্তাব । \סoמס ধ্বংসমুখে অগ্রসর হইয়া আসিতে থাকে ; উত্তর-বস্তুও তেমনি ক্রমে ক্রমে উত্তরোত্তর পুষ্টতা প্রাপ্ত হইয়া, পূৰ্ব্ববস্তুর ক্রম-সঙ্কীর্ণতা হেতু পরিত্যক্ত স্থান অধিকার-পূর্বক, স্বীয় মধ্যাহ্ন যৌবনমুখে চলিয়া আইসে। উত্তর-বস্তু ক্রমে ক্রমে, তিল তিল করিয়া, যত দুরে আসিয়া পূর্ণভা প্রাপ্ত হইল ; পূর্ববস্তুও ঠিক ততদূরে ক্রমে ক্রমে, তিল তিল করিয়া, উত্তর বস্তুতে সমাবিষ্ট হইয়া লোকনয়নে ধ্বংসপ্রাপ্তে অদৃশ্য হইয়া গেল। যেখানে পূৰ্ব্ব-বস্তুর এই অপলোপ এবং উত্তর বস্তুর পূর্ণতা দৃষ্টি করিলাম, ঠিক তাহার অব্যবহিত পরে বা সেইখান হইতেই, সেই পূর্ণতাপ্রাপ্ত উত্তরবস্তুর কোলে আবার এক নূতন উত্তরবস্তুর সঞ্চার ;–প্রথমোক্ত উত্তরবস্তু, আবার সেখান হইতে পূর্ববস্তুত্ব ভাল পাইয়া ববংসপ্রাপ্ত হইতে চলিল। একের বিকার ও ধ্বংসে অপরের উদয় হয়, মৃত্যু ৪ জন্মের যুগপৎ একত্র সমাবেশ ;–এ বিশ্বসংসারের এই ই গতি । যে দিকে দেখিবে, ইহাই প্রতি মুহূর্তে অভিনীত হইয়া আসিতেছে । অতএব এখন জিজ্ঞাসা করি, ধ্বংস কি বস্তুতঃ ধ্বংস ? রূপবৈচিত্র হইতে রূপবৈচিত্রান্তর গ্রহণ বা পূৰ্ব্ব-বস্তু উত্তর বস্তুতে ঢাকা পড়িয়া তাহার ভিত্তিরূপে পরিণত হওনকে যদি ধ্বংস বল, তবে তাঁহাই। নতুবা বস্তুতঃ ধ্বংস কোথায় ? পদার্থমাত্রের, প্রাণিমাত্রের, ইহাই ক্ষয় অবস্থা বলিয়া পরিগণিত হইয়া থাকে। অনন্তমূৰ্ত্তি জগৎসংসার, অনন্তগতিযোগে ও অনন্ত প্রকারে তাহার রূপ হইতে রূপান্তর গ্রহণ এবং বস্তু হইতে বস্বস্তর সংঘটন , তাই তুমি সকল সমভাবে দেখিতে পাইতে ও মিলাইয়া লইতে না পারিয়া গোলে পড়িয়া থাক। কিন্তু তুমি গোলে পড়িয়া থাক বলিয়া, প্রকৃতির ক্রিয় ও তাহার নিয়মে কখনও ব্যতিক্রম ঘটনা হইতে পারে না।