পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রীক ও হিন্দু । ששסא রাখিয়া ঈশ্বরের প্রতি যে প্রার্থনা এবং ধ্যান ধারণা আদি, তাহী যে বিশেষ কোন কাজে আইসে, এমনটা বোধ হয় না। প্রার্থনা ও ধ্যানধারণাদি অঙ্কশাস্ত্রীয় শূন্তের ন্তায় স্বয়ং এবং একাকী মূল্যশূন্ত ঃ কিন্তু কৰ্ম্মরূপী অঙ্কের পার্শ্বে যখন বইসে ; তখন তাহার মূল্য দশগুণ বৰ্দ্ধিত হইয়া থাকে। ধৰ্ম্ম ও তত্ত্ববিদ্যা সহ সামাজিকতার অবিচ্ছিন্ন সম্বন্ধ, সুঞ্জের্জন তাও সেইরূপ উভয়ের উভয় দিকে সমান ; সুতরাং উভয়তঃ শ্ৰী এবং উৎকর্ষসাধন পক্ষে উভয় উভয়ের সাপেক্ষপেক্ষী হয়। হিন্দুর তত্ত্ববিদ্যা, সামাজিকতা বা সামাজিকতার সারাংশস্বরূপ রাজনীতি বিষয়ে, নিৰ্ব্বাক ও নিস্তব্ধ। এ সকল বিষয়ে ধারাবাহিক কোন তত্ত্ব বা বিচারগ্রন্থ নাই, কেবল বিধিনিষেধপূর্ণ ব্যবহারগ্রন্থই দেখিতে পাওয়া যায়। কিন্তু এই সকল বিধিনিষেধ এত উচ্চ, উৎকৃষ্ট ও গাঢ় যে, তদালোচনায় ও তাঁহাদের প্রকৃতিদৃষ্টে সহজেই অনুমিত হয় যে, হিন্দুরা, সমাজ এবং রাজনীতি, বিশেষতঃ সমাজ সম্বন্ধে, যথেষ্ট গুঢ় এবং গাঢ় আলোচনা করিয়া গিয়াছেন । ইহাদের সমাজনীতি এতই উৎকৃষ্ট যে, আজি পর্য্যন্ত ইহারা বহুবিষয়ে, জগতের অন্ত তাবৎ জাতি হইতে, আপনাদের অপরিমিত শ্রেষ্ঠতা পরিজ্ঞাপন করিতে সমর্থ হইতে পারিতেছেন। গ্রীকের হিন্দুদিগের ন্তায় কেবল বিধিনিষেধ বিন্যাস করিয়া ক্ষান্ত হয় নাই। এ দিকে হিন্দুর মধ্যে যেমন সামাজিক ও রাজনীতিক তত্ত্বগ্রন্থ একেবারে নাই, ওদিকে গ্রীকদিগের মধ্যে তেমনি তাহ পরিমাণ অপেক্ষা প্রচুর বলিয়া দৃষ্ট হয়। গ্রীকদিগের তত্ত্বজীবনের উদ্দেপ্তই যেন সামাজিক ও রাজনীতিক তত্ত্ব আলোচনা করা ; সুতরাং তাহার মধ্যে যে ধৰ্ম্মবিষয়িণী তত্ত্ববিদ্যা, তাহ প্রায়ই যেন আসবাবের স্তায় ব্যবহৃত ও আলোচিত।