পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లనా8 গ্রীক ও হিন্দু । লোকবিদ্যারও দ্বিবিধ প্রকৃতি হেতু আমরা এখানে তাঁহাকে দ্বিবিধ বিভাগে বিভক্ত করিতেছি ; এক উপপাদ্য ও অপর আনুষ্ঠানিক । উপপাদ্য বিদ্যা যাহা, তাহ প্রধানতঃ অন্তর্জগৎকে অবলম্বন করিয়া উৎপন্ন বা অন্তদর্শনে মুগ্ধ ও তদিকে লীন। আনুষ্ঠানিক বিদ্যা যাহা, তাহা প্রধানতঃ বহির্জগৎকে অবলম্বন করিয়া উৎপন্ন বা বহিদর্শনে মুগ্ধ ও তদিকে লীন। উপপাদ্য বিদ্যার লীলাভূমি প্রধানতঃ চিন্তাক্ষেত্র, আর আনুষ্ঠানিক বিদ্যার লীলাভূমি প্রধানতঃ ক্রিয়াক্ষেত্র। এ পর্য্যন্ত আমরা এতদুভয় জাতীয় জীবন যতদূর আলোচনা করিয়া আসিলাম, তাঁহাতে সহজেই উপলব্ধি হইবে যে, হিন্দুর প্রকৃতি চিন্তাশীল, ভাবিতে যত পটু, করিতে ততটা পটু নহে ; আর গ্রীকের প্রকৃতি ক্রিয়াশীল, করিতে যতটা পটু, ভাবিতে ততট, পটু নহে। চিন্ত৷ স্বভাবতঃ সাধারণ বিষয়কে অতিক্রম করিয়া ধাবিত হইতে ভালবাসে, কিন্তু ক্রিয়া যাহা, তাহাকে স্বভাবতঃই উপস্থিত সংসার লইয়া ব্যাপৃত হইতে থাকে । হিন্দু যে কিজান্ত পারলৌকিক বিষয় লইয়া অধিক রত এবং গ্রীক যে কি জন্ত ইহ-সংসার লইয়া অধিক রত, উক্ত প্রকৃতিভেদ দ্বারাই তাঁহা স্পষ্টীকৃত হইতেছে। সে যাহা হউক, জাতিদ্বয়ের এরূপ প্রকৃতিভেদহেতু যে বিদ্যা উপপাদ্য, তাহাতে হিন্দুদিগের, এবং যাহা আনুষ্ঠানিত তাঁহাতে গ্রীকদিগের, উৎকর্ষলাভ করিবার কথা । বস্তুতঃ তাহাই ঘটিয়াছিল। হিন্দুরা যে কোন বিষয়ে যাহা দেখিতেন, তাহা উপপাদিক দৃষ্টির সাহায্যে ; গ্রীকেরা সেইরূপ যে কোন বিষয়ে যাহা দেখিত, তাহা আনুষ্ঠানিক দৃষ্টির সাহায্যে। ফলতঃ এ উভয় দৃষ্টি, এ উভয় জাতিকে এতদূর আকৃষ্ট করিয়াছিল যে, বিষয় আনুষ্ঠানিক হইলেও, হিন্দুর হাতে পড়িবামাত্র তাহা উপপাদ্য আকার ধারণ করে ; সেইরূপ যাহা উপপাদ্য, তাহা গ্রীকের হাতে