পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম প্রস্তাব । 8ፃ © কালে যদিও অনেকের আদর্শস্বরূপ হইয়াছিল ; তথাপি অতি প্রাচীনকালীয় বৃত্তান্ত অনুসন্ধান করিলে দেখিতে পাওয়া যায় যে, আৰ্য্যঠাকুরদিগের সাহিত্য কল্পনাবহুল ও প্রায় ধৰ্ম্মবিষয়ক প্রসঙ্গেই সমাহিত হইয়াছে। কেবল এক সেই জগজ্জ্বলকারক অতুলনীয় মহাকাব্য, অর্থাৎ মহর্ষি বাল্মীকি প্রণীত রামায়ণ, ধৰ্ম্মগ্রন্থ হইতে স্বতন্ত্র আকারে, ধৰ্ম্মশাস্ত্র হইতে সাহিত্যবিষয়ক স্বাতন্ত্র্য ভাবের পরিচয় প্রদান করিতেছে । কিন্তু তথাপি রামায়ণে ধৰ্ম্ম এবং দেববিষয়ক প্রসঙ্গের আধিক্য এত অধিক পরিমাণে আছে যে, কেবল আমরাই উহার ধৰ্ম্মগ্রন্থ হইতে স্বাতন্ত্র্যভাব নিৰ্ব্বাচন করিলাম ; নতুবা প্রগাঢ় গোড়ামীসম্পন্ন হিন্দুধৰ্ম্মাশ্রেয়ী কোন ব্যক্তি কখনই তাহা করিবে না এবং অন্ত কেহ করিলেও তাহ সহ করিতে পরিবে না। উহা তাহদের মনে ধৰ্ম্মশাস্ত্র বলিয়া এতদূরই প্রতীত ষে, পুণ্যপ্রদ পবিত্র ইতিহাস ও ধৰ্ম্মগ্রন্থ বলিয়াই কেবল উহাকে পাঠ ও সমাদর করিয়া থাকে ; এবং তাঁহাদের আরও বিশ্বাস এই যে, উহা পাঠ করিলে, পাপ হইতে নিস্কৃতি এবং পুণ্যলোকে অবস্থান লাভ হইয়া থাকে। শাহ হউক, আমরা রামায়ণকে কাব্য বলিয়াই ধরিলাম। বলা বাহুল্য যে, এই রামায়ণ জগতের একখানি অতি অতুলনীয় মহাকাব্য, সৰ্ব্বত্র মহত্ত্ব এবং রসমাধুর্য্য ও রমণীয়ত ভাবে পরিপূর্ণ। এই কাব্যগ্রন্থ আমাদিগের বিদ্যাবুদ্ধি হইতে এতই উচ্চে অবস্থান করে যে, তৎসম্বন্ধে ভাল কি মন্দ যাহাই বলিতে যাই না কেন, যেন তাহাতে কেমন একটু বাধ-বাধ ও লজ্জা-লজ্জা বোধ হয় এবং আপনাপনিই যেন ঘৃষ্টত বোধে কুষ্ঠিত হইতে হয়। ফলতঃ এই গ্রন্থ কাব্য-বিষয়ে চরমোৎকর্ষ। অতঃপর এই কাব্য সম্বন্ধে যাহা কিছু বলিতে প্রবৃত্ত হইতেছি, তাহা অতি বিনীত ভাবে এবং আগে আদিকবি বাল্মীকির পদে বহু শতবার প্রণিপাতপূৰ্ব্বক ।