পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম প্রস্তাব । 8bt যায় যে ছিল, তবে তাহ নিঃসন্দেহ লোপ হইয়াছে এবং আমাদের হাতে আসিয়া পৌছে নাই। ভারতীয় প্রভূত বিপ্লবরাশির মধ্যে লোপ হওয়ার সম্ভাবনাই অধিক । রামায়ণ ও মহাভারত ছাড়িয়া দিলে, তাহদের নিম্নে সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রাচীন সাহিত্য গ্রন্থ মৃচ্ছকটিককে ধরিতে হয়। এই মৃচ্ছকটিক কথিত গ্ৰীক লেখকদিগের অপেক্ষা কিঞ্চিৎ আধুনিক। উহা স্ত্রীষ্টের শত বৎসর পূৰ্ব্বে রচিত হয়। এই গ্রন্থের অপর কোন উদ্দেন্ত নাই, প্রধান উদ্দেশু প্রেমবর্ণনা ;— গ্ৰীক-কবিদিগের সাধারণ উদ্দেশ্বের সঙ্গে অনেক তফাত । সে যাহা হউক, যদিও কথিত গ্ৰীক সাহিত্যগ্রন্থ সকলের স্তায় সেকালের সাহিত্য গ্রন্থ বেশী পাওয়া যায় না বটে ; কিন্তু তৎপরিবর্তে অসীম প্রতিভা ও পাণ্ডিত্যপরিপূর্ণ বিবিধ বেদাঙ্গ ও তাহার ছায়াশ্রয়ী অপুৰ্ব্ব রত্নসমূহে পরিপূর্ণ অপরাপরবিষয়ক বিবিধ গ্রন্থ এত পাওয়া যায় যে, তাহাদের কি সংখ্যা, কি সারত্ব, এ সকলের তুলনে, গ্রীকের বিদ্যাগ্রন্থ সকল বহুলাংশে নগণিতের মধ্যে পড়িয়া যায়। গ্ৰীক বিদ্যাগ্রন্থসকল সাধারণতঃ রাজনীতি, সমাজনীতি ও লোকযাত্রা বিষয়ে, আর হিন্দুর বিদ্যা গ্রন্থসকল সাধারণতঃ ধৰ্ম্মনীতি ও ব্যবহারনীতি বিষয়ে। এখানেও স্ব স্ব জাতীয় প্রকৃতির পরিচয় । যে কোন বিষয়ের সংশোধনে,--ব্যঙ্গোক্তি, রূপক, কটাক্ষপাত, দৃপ্তাভিনয় প্রভৃতি, সামাজিকস্বথপ্রিয় গ্রীকের প্রধান অস্ত্র । তত্তং স্থলে, হিন্দুচরিত্র স্বতন্ত্র। হিন্দুর দৃকপাতশূন্ত নিষ্ঠ ও রুচি এমনিই কঠোর ও থরতর যে, তিনি যাহা কিছু সংশোধন করিতে চাহিবেন, তাঁহাই অনুশাসন—ধৰ্ম্মামুশাসন বাক্যে ; ব্যঙ্গোক্তি প্রভৃতি খোষ-পোষাকী উপায়ের ধার ধারিতেন না। বাঞ্ছারাম, খেদ করিও না ; কেবল আলো চাউল জার কাচকলায় খোষপোষাক আসিবেই বা কোথা হইতে ।