পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

•w গ্ৰীক ও হিন্দু। প্রাচুর্ভাবকাল। এই সময়ে ভারতবর্ষ, জাগতিক পুরাবৃত্তমধ্যে এবং সাংসারিক ব্যাপারে অনেকটা গৌরবলাভ করিয়াছিল। এই সম্প্রদায়ের ধৰ্ম্ম দ্বারা লোকের পুরাতন মনে পুনৰ্ব্বার নূতন প্রকারের তেজ নিক্ষিপ্ত হয়। কালে কুটক্রিয়াবহুলতাহেতু হিন্দুধৰ্ম্মে বহুবিকৃতি সংঘটন হওয়ায়, লোকের মন যে পারলৌকিক এবং ছন্ন মায়াবাদ বা তথাবিধ বিষয়ে মোহাভিভূত হইয়া জড়প্রায় হইয়াছিল ; এই নবেদিত বৌদ্ধধৰ্ম্মপ্রভাবে তাহার বহুলাংশ অপনীত হইয়া যায়। এই সময়ের রাজা অশোক, সমগ্র পরিজ্ঞাত ভারতের অধীশ্বর। লোকসকল এখন সাংসারিক আত্মোৎকর্য অবধারণ ও তাহ রক্ষণে সমর্থ। বিদেশবাণিজ্যের অভু্যদয় এবং ধৰ্ম্মপ্রচারকার্য্যের বিস্তারবহুলতা হওয়ায়, স্থলপথ ও জল পথে বহু স্থানে যাতায়াত আরম্ভ হইয়াছিল । এই সময়ে মুধু নানা দেশ বিদেশে গমন ও ভ্রমণেই মানবীয় শক্তি পর্য্যবসিত হয় নাই, সে সকলের ফলস্বরূপ ভূগোল এবং রসায়ন প্রভৃতি বিবিধ বিজ্ঞানশাস্ত্ৰ সকলেরও বহুল আলোচনা হইয়াছিল। এই সময়ে কৃষি ও বাণিজ্য উভয়বিধ উপায়দ্বারা বহু ধন সঞ্চয় এবং শিল্পবিদ্যারও 'বিশেষ উন্নতিসাধন হইয়াছিল। এই সময়ে আর্য্য-জননী ভারতের নাম পৃথিবীর দিগ দিগন্তে ধ্বনিত হয় এবং ধৰ্ম্মবীর বৌদ্ধ প্রচারকগণ না গিয়াছিল এমন স্থানই প্রায় বিরল। লৌকিক মুখস্বচ্ছনাত ধরিলে, সে বিষয়েতেও ভারতের এই সময়ের মূৰ্ত্তি অতি মনোহর। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, এ মূৰ্ত্তি বহুস্থায়ী নহে—ফলতঃ ইহার প্রকৃতিও বহুক্ষণস্থায়ী হইবার নহে। যাহা হউক, ভারতের পূর্বাপর ধরিতে গেলে, এ দীর্ঘ সময়ের মধ্যে বৌদ্ধদিগের প্রান্তর্ভাবকাল পলকবৎ ভিন্ন আর কি বল৷ যাইতে পারে ? : -