পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রীক ও হিন্দু। অক্ষম সাধু প্রভেদ অতি অল্পই। যথার্থ সাধু আতঙ্কে ভগ্নপদ হয় না ; ঘটনাচক্রে তাঁহাদের সাধনা সিদ্ধ না হইলেও চেষ্টার ক্রট থাকে না, অন্ততঃ সংসারের ভাবী সিদ্ধির পথ তাহারা অনেক দূর অগ্রসর করিয়া দিয়া থাকে। এরূপ সাধু যাহার, তাহদেরই সিদ্ধিমন্ত্র সেই নিত্যশ্রত অথচ নিত্য-বিশ্বত মহামন্ত্র –“মন্ত্রের সাধন কিম্বা সুমনস ভাবের মূল, সত্যে রতি ; সত্যে রতির মূল, নিষ্কাম কৰ্ম্মান্থসরণ অর্থাৎ স্রষ্টার সকাশে আত্মকৰ্ত্তব্যবোধে কৰ্ম্মামুসরণ । এই সাধন সম্বন্ধে, যে যে কথা ব্যক্তিগত জীবনের কথিত, জাতীয় জীবনের প্রতিও অবিকল তাহ বৰ্ত্তে । কিন্তু মা ভারতলক্ষি, কথা ত সব শুনিলাম, বুঝিলামও সকলই ; কিন্তু জিজ্ঞাসা করি, তুমি ঐ কঙ্কাল-মূৰ্ত্তি, আমি এই রুগ্ন সন্তান; তুমি ঐ রুক্ষকেশ ভিখারিণী, আমি এই অস্ত্রসার হাড়ের মালা ; তুমি ঐ ভয়দও ধূমাবতী, আমি এই ক্ষুধিত কা—কা” শব্দ সম্বল ; আমি ভগ্নপদ, ভগ্নহৃৎ, লোলচৰ্ম্ম, সমলদেহ, উদরান্ন যাহার আকাশে, আহা করিতে যাহার কেহ নাই, পদদলিত করিতে যাহার সবাই আছে—আমি কি করিয়া, কোন উৎসাহে, কোন সাহসে সাহসী হইয়া, তোমার সাধনামস্ত্রে দীক্ষিত হই ? তোমার যে দিকে যাই, সেই দিকেই নিবির মরুকাস্তার ; যে দিকে তাকাই, সেই দিকেই জীবশ্বন্ত ৰিকট-মূৰ্ত্তি কঙ্কালমৃগু ; আকাশে কাল মেঘ ; নিয়ে স্বচ্ছন্ন অন্ধকারপুঞ্জ দৃশ্বের দূর প্রান্ত অতিক্রম করিয়া ধাবিত ; ওদিকে কাল সমুদ্রের তরঙ্গ আম্ফালন গভীর গর্জনে গ্রাস করিতে অদৃশ্যে অগ্রসর হইয়া আসিতেছে ; আমি একাকী, সহায়শূন্ত,